Advertisement
E-Paper

সচেতন নাগরিক, সি-ভিজিল অ্যাপে এল ১০ অভিযোগ

সোমবার সাংবাদমাধ্যমকে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছিলেন, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ফ্লাইং স্কোয়াড-সহ নানা টিম নজরদারি চালাবে। ইতিমধ্যে নজরদারি শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:১২
নজরদার: পুলিশের ‘নাকা চেকিং’। সিউড়ির কাছে। নিজস্ব চিত্র

নজরদার: পুলিশের ‘নাকা চেকিং’। সিউড়ির কাছে। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে রবিবার। তখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, সেই বিধি ভঙ্গ হচ্ছে কিনা, এ বার সরাসরি নাগরিকেরাই তা ‘ভিজিল্যান্স’ করতে পারবেন। এর জন্য তাঁদের হাতিয়ার হবে ‘সিটিজেন ভিজিল্যান্স অ্যাপ’ বা সংক্ষেপে ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপ। সেই অ্যাপ কাজ করা শুরু করেছে বীরভূমে।

সি-ভিজিল অ্যাপ

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোট ১০টি অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন সংগঠিত করার পথে কোনও ভাবে কোনও রাজনৈতিক দল বাধা হলে এবং বুথ দখল, নগদ বিতরণ কিংবা ভোটারদের প্রলুব্ধ করার জন্য কোনও দলের প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকদের দ্বারা নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের কোনও ঘটনা ঘটলে তা সরাসরি ওই অ্যাপের মাধ্যেমে নির্বাচন দফতরকে জানাতে পারবেন যে কেউ। গুগল প্লে স্টোর থেকে সি-ভিজিল অ্যাপ ডাউনলোড করে নিয়ে বিধিভঙ্গের ঘটনার স্থির ছবি বা ভিডিও ক্লিপ দিয়ে অভিযোগ জানানো যাবে।

কমিশনের নির্দেশে অভিযোগের ১০০ মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জেলা নির্বাচনী দফতর বীরভূমের ১১টি বিধানসভা এলাকা মিলিয়ে ৬৬টি দল তৈরি করেছে সেই সব অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই অভিযোগ জানাতে পারবেন জেলার নাগরিকেরা। কোন এলাকা থেকে অভিযোগ আসছে অ্যাপের মাধ্যমেই বুঝতে পারবে জেলা নির্বাচনী দফতর। কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, সেটা অভিযোগকারীকে জানানো হবে তাঁর পরিচয় গোপন রেখেই। জেলা নির্বাচনী দফতর বলছে, অ্যাপ ব্যবহার যে শুরু করেছেন নাগরিকেরা, তা ১০টি অভিযোগ আসা থেকেই পরিষ্কার।

নাকা চেকিং

জেলার ৪০টি পয়েন্টে নাকা চেকিং থেকে বীরভূম- ঝাড়খণ্ড সীমানায় অতিরিক্ত নজরদারি। সেই সূত্রে ধরেই উদ্ধার হল, বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, চোলাই মদ থেকে জাল টাকার নোট। কেন্দ্রীয় বাহিনী এখনও জেলায় এসে পৌঁছয়নি। কিন্তু রবিবার নির্বাচন নির্ঘণ্ট ঘোষিত হওয়ার পরেই তৎপরতা শুরু করছে জেলা পুলিশ। সাফল্যও মিলেছে। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানাচ্ছেন, বীরভূম ও ঝাড়খণ্ডে নজরদারি তো রয়েইছে, জেলার ২৬টি থানা এলাকার ৪০টি পয়েন্টে নাকা চেকিং চলছে। ৯টি আগ্নেয়ান্ত্র, ১০টি গুলি উদ্ধার হয়েছে। বর্তমান ও পুরনো অপরাধে যুক্ত মিলিয়ে গ্রেফতার হয়েছে ৩০০ জন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

২৯ তারিখ চতুর্থ দফায় জেলার দু’টি লোকসভা আসনে নির্বাচন। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের তিন জেলা দুমকা, পাকুড় ও জামতাড়া বীরভূম সীমানার সঙ্গে জুড়ে। যার দৈর্ঘ্য শতাধিক কিমলোমিটার। উদ্বেগের বিষয় যে জেলা গুলি মাওবাদী প্রভাবিত। বীভূমের ৯টি থানাও এক সময় মাওবাদী প্রভাবিত বলে ঘোষিত ছিল। এখন মাওবাদীদের গতিবিধি নিয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি বা তথ্য না মিললেও পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, ‘‘আন্তঃরাজ্যের বিভিন্ন জেলা, যেগুলির সঙ্গে আমাদের জেলার সীমানা রয়েছে, নির্বাচন চলাকালীন বা নির্বাচনের আগে সেই সীমানা পুরোপুরি সুরক্ষিত রাখাই মূল লক্ষ্য।’’

সোমবার সাংবাদমাধ্যমকে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছিলেন, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ফ্লাইং স্কোয়াড-সহ নানা টিম নজরদারি চালাবে। ইতিমধ্যে নজরদারি শুরু হয়েছে।

গত লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে পাকুড়ের পুলিশ সুপার-সহ ছয় পুলিশকর্মীকে হত্যা করেছিল মাওবাদীরা। গোয়ান্দা সূত্রের দাবি ছিল, ওই হামলার পিছেনে বীরভূমের মাওবাদীদের হাত রয়েছে বা অপারেশনের পরে তারা পালিয়ে বীরভূমে আশ্রয় নিয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন বা সাম্প্রতিক অতীতে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক সংঘাতের সময়েও মাওবাদী প্রসঙ্গ তুলেছে শাসকদল। সেই কারণে এ বার ভোটের আগে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানা।

এই অবস্থায় জেলার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি যাতে ভোটের আগে কোনও ধরনের নাশকতা না ঘটে বা সীমানা পেরিয়ে মাওবাদীদের গতিবিধি না বাড়ে, সে ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক জেলা পুলিশ-প্রশাসন।

Politics Lok Sabha Election 2019 TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy