Advertisement
E-Paper

বিজেপির মিছিলে গলায় কোপ

জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ব্লেড জাতীয় ধারাল কিছু দিয়ে হামলা চালিয়েছিল ওই যুবক। হামলার পরেই সে পালায়। পরে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২৪
রক্তাক্ত: ছুরির আঘাতে জখম বিজেপি কর্মী। শুক্রবার কোটশিলা থানার মাঝিডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

রক্তাক্ত: ছুরির আঘাতে জখম বিজেপি কর্মী। শুক্রবার কোটশিলা থানার মাঝিডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

ছুরি নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ায় বিজেপি প্রার্থীর মিছিলে। গলায় ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন বিজেপির এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যর স্বামী শালিগ্রাম মাহাতো। পরে তাঁকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ কোটশিলা থানার মাঝিডি গ্রামের ঘটনা। আহতের বাড়ি মাঝিডির পাশের পাঁড়রা গ্রামে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে বিজেপির নেতা-কর্মীরা পরে কোটশিলায় চাষমোড়-তুলিন রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। অভিযুক্ত মাঝিডি গ্রামের যুবক রোহিত কুমার ওরফে লছুকে পরে পুলিশ আটক করে।

বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘আমি মিছিলে একেবারের সামনে ছিলাম। আমার ঠিক পিছনেই ছিলেন শালিগ্রামবাবু। আচমকা এক যুবক আমাকে লক্ষ্য করে ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। আমি দ্রুত সরে যাই। ছুরি গিয়ে লাগে শালিগ্রামবাবুর গলায়।’’ ওই ঘটনাকে ঘিরে বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। তা উড়িয়ে ঘটনার পিছনে গ্রাম্য বিবাদ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ব্লেড জাতীয় ধারাল কিছু দিয়ে হামলা চালিয়েছিল ওই যুবক। হামলার পরেই সে পালায়। পরে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। শেষে রোহিত কুমার ওরফে লছু নামে ওই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তবে, কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’ বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, শীঘ্রই তাঁরা অভিযোগ করবেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহতের গলার এক পাশে আঘাত লেগেছে। প্রচুর রক্তপাতও হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা প্রায় দশটা নাগাদ মাঝিডি গ্রামে বিজেপি প্রার্থীর মিছিল হচ্ছিল। ছিলেন কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। মাঝিডি গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি নেতা লঙ্কেশ্বর কুমার, জয়রাম মুর্মুদের দাবি, ‘‘মিছিল সবে শুরু হয়েছে। সেই সময়ই এক যুবক মিছিলে হামলা চালায়। ঝালদা ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যা গীতারানি মাহাতোর স্বামী শালিগ্রামবাবু গলা দিয়ে রক্ত ধরছিল। রুমাল বেঁধে দেওয়া হয়। সবাই তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। সেই সুযোগে হামলাকারী পালিয়ে যায়।’’ তাঁকে প্রথমে কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে বিজেপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা কোটশিলায় চাষমোড়-তুলিন রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক অবরোধ চলে। মিছিলে থাকা বিজেপির জেলা সম্পাদক রবীন সিং দেও অভিযোগ করেন, ‘‘এ ভাবে প্রকাশ্যে মিছিলে ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোয় স্পষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বলে এখানে কিছু নেই।’’ যদিও পুলিশের দাবি, ওই গ্রামে মিছিল করার ব্যাপারে তাদের জানানো হয়নি। এ দিকে ঘটনার খবর পৌঁছতেই পুলিশ গোটা এলাকা জুড়ে নাকা তল্লাশি শুরু করে, যাতে অভিযুক্ত যুবক কোনও ভাবেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে না যেতে পারে।

এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, ‘‘ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই আমাদের মিছিলে ভিড় বাড়ছে দেখে তৃণমূল আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। তাই এ বার দিনের আলোতেই আমাদের প্রার্থীর উপরে হামলার চেষ্টা হল। তিনি সরে যাওয়ায় কপাল জোড়ে বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু, আমাদের এক কর্মীর গলা কেটে গিয়েছে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’

যদিও তৃণমূলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি দাবি করেছেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। গ্রাম্য বিবাদের ঘটনা বিজেপি রাজনৈতিক রং দিচ্ছে। বিজেপির এই অপপ্রচার আমরা রাজনৈতিক ভাবেই মোকাবিলা করব।’’

পুলিশের একটি সূত্র থেকেও দাবি করা হচ্ছে, ওই যুবক তাদের জানিয়েছে, কিছুদিন আগে স্থানীয় একটি ছো নাচের আসরে তার সঙ্গে শালিগ্রামের ঝামেলা হয়। তাকে মারধরও করা হয়, এমনকি জল চাইলেও তাঁকে তা দেওয়া হয়নি বলে সে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। সেই রোষেই এ দিন শালিগ্রামকে সামনে পেয়ে সে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেনি। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পুলিশের সাজানো বুলি আউড়াচ্ছে হামলাকারী।

Lok Sabha Election 2019 Violence BJP Rally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy