প্রতীকী ছবি।
ভোটের ময়দানে তারা যুযুধান। আজ, রংয়ের উৎসবেও দু’মেরুতে থাকছে ডান-বাম। এমনিতেই ভোটের প্রচারে কিংবা দেওয়াল লিখনে বিরোধীদের চেয়ে ঢের এগিয়ে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আনন্দ, উৎসবকে সামনে রেখে আজ, বৃহস্পতিবারও জনসংযোগের কাজ কয়েক কদম এগিয়ে রাখতে চাইছেন বীরভূম ও বোলপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থী, শতাব্দী রায় ও অসিত মাল। অন্য দিকে, নির্বাচনের কাজে উৎসবের দিনকে ব্যবহার করা ঠিক নয় বলে মনে করেন ওই দু’টি আসনের বাম প্রার্থী রেজাউল করিম এবং রামচন্দ্র ডোম। তাঁরা বলছেন, ‘‘রংয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচিকে মেশাব কেন?’’
মাঝে দু’দিন জেলায় ছিলেন না বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী। বুধবারই দিল্লি থেকে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার দোলের দিন নিজের কেন্দ্রে একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। সকালে তারাপীঠের বসন্ত উৎসবে যোগ দেবেন। বিকেলে রাজনগরে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন ও রোড-শো রয়েছে। শতাব্দী মনে করেন, ‘‘দোল মানেই মিলন উৎসব। দোল মানেই তারুণ্য, উচ্ছ্বাস, রঙিন জীবন। রং মিলান্তির এই খুশির উৎসবে শামিল হব আমিও। প্রথমে ভাবিনি। কিন্তু, দোলের দিন যখন একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে, তখন আবির খেলাই বা বাদ যাবে কেন?’’
দোলের দিনে নিজের নির্বাচনী এলাকা বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে ‘প্রচার-রং’এ মেতে উঠতে তৈরি শাসকদলের এ বারের প্রার্থী অসিত মালও। তিনি বলছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর, গুনুটিয়া, ছোটতুড়ি গ্রামে থাকব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে হোলি খেলব। রং খেলে মানুষের কাছে বার্তা দিতে চাই, অশুভ শক্তি, দূষণ দূর হোক। শুভ শক্তির জয় হোক। মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি আসুক।’’ অসিতবাবুর সংযোজন, ‘‘আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক ভোট প্রচার করেছি। কিন্তু, মানুষের এত সাড়া কখনও পাইনি। দোল উৎসবে তাই মানুষের সঙ্গেই থাকতে চাই।’’ দোলকে ঘিরে দুই প্রার্থীর এমন উৎসাহ দেখে তৃণমূল কর্মীদের প্রতিক্রিয়া, ভোটে জিতলে আবির খেলা নিশ্চিত। কিন্তু, প্রচার-পর্বেই যখন দোল উৎসব রয়েছে, সেখানে যদি প্রার্থীরা আবির না খেললে বা উৎসবে শামিল না হলে, চলে নাকি?
শাসকদলের ভিন্ন ভাবনায় বিশ্বাসী বামপ্রার্থীরা। ব্যক্তিগত ভাবে দোল খেললেও বা গায়ে রং কিংবা আবির নিলেও, মানুষের নির্মল আনন্দের দিনে রাজনীতি ঢোকাতে নারাজ প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তথা বোলপুর আসনে অসিত মালের প্রতিপক্ষ বাম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম। তাঁর কথায়, ‘‘দোলকে রাজনীতির আঙিনা করা ঠিক নয়। রংয়ের এই উৎসবে মানুষ নির্মল আনন্দে মেতে উঠুক। নির্বাচনী কাজে এই উৎসবকে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’’
প্রায় একই বক্তব্য বীরভূম আসনে শতাব্দী রায়ের প্রতিপক্ষ, বাম প্রার্থী রেজাউল করিমের। তিনি বলছেন, ‘‘অন্য বার যেমন সপরিবার অন্যদের সঙ্গে রং বা আবির খেলি সেটা খেলব। কিন্তু, দোলের দিন ভোটের প্রচার নিয়ে আলাদা করে কোনও পরিকল্পনা নেই। বরং এই উৎসবে মানসিক ভাবে মানুষের পাশে থাকব। তবে এর সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচি মিলিয়ে সকলের আনন্দকে ভারাক্রান্ত করতে চাই না।’’ দুই বাম প্রার্থী জানাচ্ছেন, দোল বা হোলি দু’দিনের এই পর্ব মিটিলেই প্রচারে জোর দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy