Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভয় নয়, দলীয় কর্মীদের পথে নামার আহ্বান সূর্যকান্ত মিশ্রর 

দলীয় কর্মীদের জোর কদমে ভোট প্রচারে নামার কথা বললেন সূর্যকান্ত মিশ্র।

বক্তা: বিষ্ণুপুরে সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

বক্তা: বিষ্ণুপুরে সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ১০:৫৪
Share: Save:

দলীয় কর্মীদের ভয় না পেয়ে জোর কদমে ভোট প্রচারে নামার কথা বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার বাঁকুড়ার কমরার মাঠ এলাকায় জেলার দুই কেন্দ্র বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরের প্রার্থী যথাক্রমে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র ও সুনীল খাঁকে নিয়ে কর্মিসভা করেন সূর্যবাবু। পরে কর্মিসভা করেন বিষ্ণুপুর স্টেডিয়ামে। সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘নিজেদের সবজান্তা মনে করবেন না। যে কর্মী কৃষক, তিনি কৃষকদের কাছে গিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শুনুন। যিনি আদিবাসী, তিনি আদিবাসীদের বাড়ি ঘুরে ঘুরে তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁদের দলের কথা বলুন।’’

তাঁর অভিযোগ, “যুদ্ধের জিগির তুলে আসল সমস্যাকে আড়াল করা হচ্ছে। চাষির ফসলের দাম নেই, কৃষি ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন চাষিরা। চাকরি নেই, শিল্প নেই। শালবনিতে যে শিল্প আসার কথা ছিল, তার কী হল? বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের হাল কী? এ সব দেখে খুব দুঃখ হয়।”

কর্মীদের ভয় দূর করতে সূর্যবাবু মন্তব্য করেন, ‘‘ওই যে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যিনি বড়বড় কথা বলেন, তাঁর মতো ভীতু কেউ নেই। মনে রাখবেন, রাতের অন্ধকারে আমরা ঘুরে বেড়াতে পারি। কারণ আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।” রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তিনি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ইঙ্গিত করে তাঁর নানা বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওই পরামর্শ দিয়েছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দীর্ঘ বাম আমলে সিপিএমের গড় হিসাবে পরিচিত বাঁকুড়ায় অবশ্য তারা এখন অনেকখানি কোণঠাসা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় ১২টির মধ্যে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীরা পাঁচটি আসনে জয়ী হলেও গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সে ভাবে দাগ কাটতে পারেনি সিপিএম। উল্টে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের তুলনায় অনেক বেশি আসন জেতা বিজেপিকেই লোকসভায় তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে দাবি করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও সূর্যকান্ত এদিন দাবি করেন, “সাধারণ মানুষ খোলা মনে ভোট দিতে পারলে এই জেলায় ফের উড়বে লাল পতাকা।”

রাজ্যের বেশ কিছু আসনে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে এ দিন ফের অভিযোগ তোলেন সূর্যকান্তবাবু। তাঁর দাবি, “যাঁরা ভাবছেন বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তৃণমূলকে উৎখাত করবে, তাঁরা ভুল মনে করছেন। কেন্দ্রে পাঁচ বছর সরকার চালাল বিজেপি। এত দিনে গোটা তৃণমূল দলটাই জেলে ঢুকে যাওয়ার কথা। অথচ সারদা বা নারদা দুর্নীতি নিয়ে সে ভাবে তদন্তই হল না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, “নারদা কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, দলের নেতানেত্রীরা টাকা নিয়েছেন আগে জানলে তিনি ভোটের টিকিট দিতেন না। তারপরেও তিনি টিকিট দিচ্ছেন!”

বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁর পাল্টা দাবি, “সিপিএমের আমলে রাজ্যে উন্নয়ন স্তব্ধ হয়েছিল, ভোটের পরিবেশও ছিল না। মানুষের আস্থা সিপিএম কোনওদিনই পাবে না।’’ বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘সূর্যকান্তবাবু বোঝহয় ভুলে গিয়েছেন, নবান্নে গিয়ে তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাটলেট খেয়ে এসেছিলেন। এ রাজ্যে বিরোধী হিসাবে কোনও ভূমিকাই ছিল না সিপিএমের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE