Advertisement
E-Paper

দলের রশি কষে ধরা হোক, মমতার কাছে দাবি কর্মীদের

২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় পাঁচটি বিধানসভা হারিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটে দু’টি আসনই হাতছাড়া হয়েছে।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০৮
তুঙ্গে: সভাস্থলে আনা হয়েছে মাইক। বাঁকুড়া শহরে সতীঘাটের কাছে সোমবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

তুঙ্গে: সভাস্থলে আনা হয়েছে মাইক। বাঁকুড়া শহরে সতীঘাটের কাছে সোমবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

দলের বাঁকুড়া জেলার নেতাদের একাংশের মানসিকতায় কি বদল এসেছে? তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভার এক দিন আগে, সোমবার দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে এই চর্চা বড় হয়ে উঠেছে। ‘দ্বন্দ্ব’ মুছে জেলা নেতাদের এককাট্টা করতে আজ, মঙ্গলবার নেত্রী কী দাওয়াই দেন, অপেক্ষায় তাঁরা। জেলা স্তরের নেতাদেরও কেউ কেউ ঘনিষ্ঠ মহলে জানাচ্ছেন, কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধির আচার-আচরণ নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠছে। নেত্রী এ বার ওই অংশকে সমঝে চলতে কড়া বার্তা দিলে ভাল হয়। কারণ, সামনেই পুরভোট। বছর ঘুরলে বিধানসভা ভোট। তাই সময় থাকতেই জেলা তৃণমূলের রশি কষে ধরুন নেত্রী।

২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় পাঁচটি বিধানসভা হারিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটে দু’টি আসনই হাতছাড়া হয়েছে। সেই ফলের নিরিখে জেলার ১২টি বিধানসভা ভোটেই পিছিয়ে তৃণমূল। দুই ভোটেই দলীয় অন্তর্তদন্তে পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’।

লোকসভা ভোটে দলের ফলাফল দেখে মমতা ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আগের মতো ফের দলকে সময় দেবেন। ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নেমে জেলায় সাংগঠনিক রদবদল হয়। জেলার সংগঠনকে গোছাতে দলীয় পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হয় মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে।

শুভেন্দু দফায় দফায় জেলায় এসে বৈঠক করে একটার পরে একটা জট কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য প্রায় এক বছর ধরে রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন আটকে ছিল। নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে সে সঙ্কট কাটিয়েছেন। লোকসভা ভোটের পরে, ওন্দার কয়েকজন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ সদস্যেরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাঁদের দলে ফেরানোর সঙ্গে পুরনো কর্মীদেরও পদ দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি, তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের দলের সদস্যেরাও জেলা নেতাদের নিয়ে একাধিক বার বৈঠক করে ‘সকলেই দিদির লোক’— এই মনোভাব তৈরির চেষ্টা চালিয়েছেন।

কিছুদিন আগে বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কর্মিসভা নিয়ে দলীয় বৈঠকে শুভেন্দু নির্দেশ দেন, তৃণমূল ‘রেজিমেন্টেড’ দল— এই বার্তা সর্ব স্তরে পৌঁছে দিতে হবে।

এত কিছুর পরেও দল কতটা ঐক্যবদ্ধ, সে প্রশ্ন অবশ্য এখনও উঠছে। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় কোতুলপুরের ব্লক সভাপতি প্রবীর গড়াইয়ের সঙ্গে সেখানকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার মনোমালিন্যের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এ দিন প্রবীরবাবু বলেন, “দলে যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের ভূমিকা ঠিক নয়। শ্যামলবাবুর কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা পাই না। এ সবের প্রভাব সংগঠনে পড়ছে। দলনেত্রীকে সমস্যা জানানোর সুযোগ পেলে এ কথা বলব।” শ্যামলবাবুর মাপা বক্তব্য, “যিনি অন্যের দায়িত্ব পালন নিয়ে অভিযোগ তুলছেন, তিনি বরং নিজের কাজ খতিয়ে দেখুন।”

জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “লোকসভা ভোটের পরে, কেবল দলের নেতাদের-কর্মীদেরই নয়, সাধারণ মানুষেরও ক্ষোভের কারণ মন দিয়ে শুনেছি। উচ্ছৃঙ্খল নেতাদের চরম বার্তা দেওয়া হয়েছে। সমস্ত স্তরের কর্মীদের আবার আমরা একজোট করতে পেরেছি। এখন আর পিছন ফিরে দেখা নয়, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।”

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অবশ্য কটাক্ষ, “তৃণমূল যা-ই করুক, রাজ্যের মানুষ লোকসভা নির্বাচন থেকেই পরিবর্তনের যে বৃত্ত শুরু করেছেন, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হারে তা পূর্ণ হবে।”

Mamata Banerjee TMC Bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy