শোকার্ত ধরণী সিং সর্দারের স্ত্রী। ইনসেটে (ধরণী সিং সর্দার। —ফাইল ছবি
আড়শার কেন্দুয়াডি গ্রামের যুবক ধরণী সিং সর্দারের খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম রবীন্দ্রনাথ মাহাতো। তার বাড়ি আড়শারই চিটিডি গ্রামে। বুধবার বিকেলে গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে খুন ও ইভটিজিংয়ের মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
শনিবার রাতে যেখানে স্ত্রী ও বোনের সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে মারধরে ধরণী খুন হন বলে অভিযোগ, সেখান থেকে চিটিডি গ্রামের অবস্থান কাছেই। তবে পুলিশ তদন্ত সম্পর্কে কিছু বলতে চায়নি। বৃহস্পতিবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১২ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ধরণীর স্ত্রী শিবানি জানিয়েছিলেন, যাত্রার আসর থেকে বেরিয়ে বাড়ির পথ ধরার আগে তাঁর স্বামী যখন একটি দোকান থেকে খাবার কিনছিলেন, সেই সময়ই ঝামেলার সূত্রপাত। কয়েকজন ধরণী ও তাঁর ননদ গঙ্গাকে উদ্দেশে আপত্তিকর কথা বলায়, ধরণী প্রতিবাদ করেন। সেখানে ওই যুবকদের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বাগবিতন্ডাও হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাদা পোশাকে থাকা এক জন নিজেকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়ে তাঁদের বাড়ি যেতে বলেন। তাঁরা যখন মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন, সেই সময়ই পিছন থেকে মোটরবাইক নিয়ে ধাওয়া করে ফাঁকা রাস্তায় জোড়ের কাছে তাঁদের পথ আটকায় চার জন। এক জন তাঁর শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করলে শিবানি তাঁর কলার চেপে ধরেছিলেন বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, আক্রমণকারী তাঁকে মারতেই তিনি মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারান। ধরণীর বাবা সীতারাম সিং সর্দার পুলিশের কাছে সোমবার অভিযোগ করেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর ছেলেকে মারধর করতে শুরু করে। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অভিযুক্তের পরিবার দুষ্কৃতীরা অজ্ঞাত পরিচয় জানালেও, যাত্রাপালার কাছে গোলমালের প্রত্যক্ষদর্শী ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছ থেকে দুষ্কৃতীদের পরিচয় পুলিশ কেন উদ্ধার করে তাদের ধরছে না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বিরোধীদের সঙ্গে শাসকদলের তরফেও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি উঠেছিল।
ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার আড়শা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান কেন্দুয়াডি-সহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা ঘণ্টা দেড়েক পথ অবরোধও করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য তাঁরা ৪৮ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন। বুধবার গ্রামে যান পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ভূমিজ মূন্ডা কল্যাণ সমিতির একটি প্রতিনিধি দলও। তাঁরা গ্রাম থেকে ফিরে থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy