E-Paper

ডেউচায় খনির কাজ শীঘ্র: পন্থ

ডেউচা–পাঁচামিতে কেন ‘খাপছাড়া’ জমি কেনা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সেই প্রশ্নে নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৪
মনোজ পন্থ।

মনোজ পন্থ। —ফাইল চিত্র।

বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি গড়ার কাজে হাত পড়বে পনেরো-কুড়ি দিনের মধ্যে। জমিও চিহ্নিত হয়েছে। শুক্রবার বীরভূমে এসে মহম্মদবাজারের ওই প্রস্তাবিত কয়লা খনি সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকের শেষে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি বলেন, “খনি গড়ার কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করার বিষয়ে এ দিন পর্যালোচনা হয়েছে।” তবে বৈঠক শেষে মুখ্যসচিব সিউড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরে, সোঁতসাল বাসস্ট্যান্ডের পাশে পানাগড়-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কে অবরোধে বসেন এলাকার ‘বঞ্চিত ডেউচা পাঁচামি সংগ্রাম কমিটি’র সদস্যেরা। তাঁদের ক্ষোভ, তাঁদের কাউকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। দ্রুত চাকরির দাবি এবং এখনও যাঁদের জমি রেজিস্ট্রি করা হয়নি, দ্রুত তাঁদের জমি নেওয়ার দাবি তোলেন আন্দোলনকারীরা। হুঁশিয়ারি দেন, ১০ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে ৭২ ঘণ্টার অনশনে নামবেন। পরে, পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

ডেউচা–পাঁচামিতে কেন ‘খাপছাড়া’ জমি কেনা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সেই প্রশ্নে নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তার পরেই ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির অগ্রগতি দেখতে এ দিন মুখ্যসচিবের সফর। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, খনি গড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত পিডিসিএলের এমডি পি বি সালিম-সহ রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।

দুপুরে বোলপুর স্টেশনে নেমে মহম্মদবাজারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে মুখ্যসচিব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ডেউচা-পাঁচামি যাতে তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হয়, সে জন্য কথা বলতে আসা।” সঙ্গী ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত মহম্মদবাজার ব্লক অফিসে জেলা ও রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব।

বৈঠক শেষে সিউড়ি সার্কিট হাউসে মুখ্যসচিব জানান, প্রথমে কয়লা ভান্ডারের উপরে মজুত কালো পাথর (ব্ল্যাক স্টোন) তোলা শুরু হবে। কয়লা খনি গড়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। রাজ্যের ভাবনায় রয়েছে ভূগর্ভস্থ খনি গড়ার বিষয়টিও, যাতে কম সংখ্যক মানুষকে সরাতে হয় প্রকল্প এলাকা থেকে। তিনি বলেন, “স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে।” জানান, খনি এলাকায় কাজ শুরু করতে প্রথম ধাপে ৩২৬ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে প্রথমে পাথর তোলা হবে। পরের দিন পনেরো-কুড়ির মধ্যে ‘ফিল্ড’-এর কাজ শুরু হবে।

মুখ্যসচিবের সংযোজন, “যে হেতু কোল ব্লকগুলি গভীরে, তাই ভূগর্ভস্থ মাইনিংয়ের চিন্তাভাবনা হয়েছে। দরপত্র ডাকার কাজ পিডিসিএলের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ দিন। যেমন সাড়া পাব, সেই হিসেবে কাজ এগোবে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, মহম্মদবাজারের পাঁচামি-দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা কোল ব্লকে কোথায়, কত কয়লা, মাটির কত নীচে, কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানতে ২০২২ সালে সমীক্ষা হয়। মুখ্যসচিবের কথায়, “এখানে প্রচুর ব্ল্যাক স্টোন বা ব্ল্যাসল্ট আছে। এটা বড় সম্পদ। এটা আগে তুলতে হবে। কয়লা উত্তোলনের কাজ খোলা মুখ খনিতে হতে পারে। দুটো কাজ (খোলা মুখ ও ভূগর্ভস্থ) এক সঙ্গে করা যায়।”

প্রকল্পের জমি কেনার বিষয়ে এ দিন মুখ্যসচিব বলেন, “ধাপে ধাপে জমি নিয়ে ধারাবাহিক কাজ হবে। মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই মতোই আলোচনা করেছি। স্থানীয় প্রশাসন এবং আমরা, সকলে মিলে এটা করতে চাই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manoj Pant coal Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy