Advertisement
E-Paper

গোঁজ ভয় বাড়ল বাড়তি দিনেও

পুরুলিয়া জেলায় ২-৯ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে যত আসন, তার ঢের বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছিল তৃণমূলের হয়ে।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৩৪
তৃণমূলের এই নির্বাচনী অফিস ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের এই নির্বাচনী অফিস ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

মনোনয়নের বাড়তি দিন পেয়ে স্বস্তি পেয়েছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু পুরুলিয়ায় শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের হয়েই মনোনয়ন জমা পড়ল বিভিন্ন ব্লক ও মহকুমাশাসকের অফিসে!

পুরুলিয়া জেলায় ২-৯ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে যত আসন, তার ঢের বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছিল তৃণমূলের হয়ে। দলের প্রতীক যাঁদের নেই, তাঁদের নাম প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। কিন্তু, তা যে অনেকে কানে তুলছেন না, তা সোমবার মনোনয়নের বাড়তি দিন সামনে এসে গেল।

৩৮ আসনের পুরুলিয়া জেলা পরিষদে প্রার্থী হতে চেয়ে দলের ইচ্ছুক প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় দুশো আবেদন জমা পড়েছিল জেলা নেতৃত্বের কাছে। আবেদনকারীদের মধ্যে গতবারের বিজয়ী প্রার্থীরাও যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন নতুনেরাও। জেলা সভাপতি জানিয়েছিলেন, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু দল থেকে আর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। জেলা সভাপতিই প্রার্থীদের ফোন করে জানিয়ে দেন। যদিও ৯ এপ্রিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের জন্য তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করেছিলেন ৭৮ জন। তৃণমূল নেতৃত্বের চিন্তা বাড়িয়ে এ দিন আরও মনোনয়ন জমা পড়ল।

দল সূত্রের খবর, মনোনয়ন নিয়ে পুরুলিয়া ২ ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেমেছে রাস্তায়। এই ব্লকের ২১ নম্বর আসনে আগে চার জন মনোনয়ন জমা করলেও, সোমবার আরও তিন জন নাম জমা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে তৃণমূলের হয়ে এই আসনেই মোট সাত জন মনোনয়ন দাখিল করলেন। গতবার এই আসন থেকে বিজয়ী পুষ্প বাউরি এ বারেও মনোনয়ন জমা করেছেন। এই আসনেই দাবিদার ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি। তাঁর অনুগামীদের দাবি, দলীয় নেতৃত্বেরও অনুমোদন ছিল। কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্ব তাঁকে বহিরাগত বলে বেঁকে বসায়, তিনি সরে দাঁড়ান।

সোমবার যাঁরা ওই আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুরুলিয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী তৃণমূল সভাপতি আনন্দ রাজোয়াড় ও পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সমীরণ মুখোপাধ্যায়ও। এই দুই নেতা এ দিন পুরুলিয়া মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে মনোনয়ন দেন। তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। এক নেতা বলেন, ‘‘তাহলে আন্দাজ করুন, তলে তলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কতটা তীব্র।’’

দলীয় নেতৃত্বের দাবি, এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ হলধর মাহাতো। তারপরেও কেন প্রার্থী হলেন? আনন্দবাবু বলছেন, ‘‘কর্মীদের দাবিতেই মনোনয়ন দিয়েছি।’’ সমীরণবাবুর দাবি, ‘‘বহিরাগত প্রার্থীকে আমরা মানব না। তাই মনোনয়ন করলাম।’’ কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রাজপতি মাহাতো বলেন, ‘‘যাঁকে নিয়ে প্রশ্ন নেই, এমন প্রার্থীর জন্যই তো আমরা মাঠে নামব।’’

আর হলধর মাহাতো বলছেন, ‘‘দলের কিছু লোকের খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। এতে পরিষ্কার হয়ে গেল ভোটে কে কী ভূমিকা নেবেন।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন জেলার পঞ্চায়েতগুলিতে আরও ২২২টি মনোনয় পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে ৯২ এবং জেলা পরিষদে ৪৭টি মনোনয়ন
জমা পড়েছে।

তৃণমূলের এক জেলা নেতার মন্তব্য, ‘‘এই বাড়তি দিনেও দলের হয়ে অনেকে মনোনয়ন দিলেন, ভাবা যায় না। দলে এমন নেতা-কর্মী থাকতে এই জেলায় শত্রুতার জন্য আর আলাদা ভাবে বিরোধীদের প্রয়োজন কী?’’

nomination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy