Advertisement
E-Paper

পুকুর ‘চুরি’, নিশানায় মন্ত্রীর ইএ

শহরের বুকে পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে পুরসভার ‘নীরবতা’ আগেই ক্ষুব্ধ করেছে বিরোধীদের। এ বার খোদ মন্ত্রীর ইএ-র বিরুদ্ধে পুকুর ভরাট করে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ তুলে পুরসভার বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে নামলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর অমল শেখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৪
বিতর্কে: এই বহুতলের নির্মাণ ঘিরেই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

বিতর্কে: এই বহুতলের নির্মাণ ঘিরেই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

শহরের বুকে পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে পুরসভার ‘নীরবতা’ আগেই ক্ষুব্ধ করেছে বিরোধীদের। এ বার খোদ মন্ত্রীর ইএ-র বিরুদ্ধে পুকুর ভরাট করে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ তুলে পুরসভার বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে নামলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর অমল শেখ।

ওই মর্মে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন রামপুরহাট পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর। পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ আদালত-সহ জেলা মৎস্য দফতর, রামপুরহাট মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরেও পুকুর ভরাটের লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন অমল। গোটা ঘটনায় যাঁর নাম জড়িয়েছে, শহরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট বিশ্বজিৎ চৌধুরী অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি করেছেন।

ঠিক কী ঘটেছে?

অভিযোগকারী কাউন্সিলরের দাবি, তাঁর ওয়ার্ডে রামপুরহাটের ৭৭ নম্বর মৌজার ১০২১ নম্বরে দাগে থাকা ৭৪ শতক পুকুরটি কালীতলা পুকুর নামে ভূমি দফতরে রেকর্ডভুক্ত। ওই পুকুরেরই ১০ শতক অংশে সম্প্রতি বেআইনি ভাবে বাড়ি নির্মাণ করছেন বিশ্বজিৎবাবু। অমলের অভিযোগ, ‘‘বহুতল বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মেনে যে পরিমাণ জায়গা ছাড়া দরকার, এ ক্ষেত্রে তা ছাড়া হয়নি। আবার পুকুরপাড়ে কাজের ক্ষেত্রে জমির চরিত্রও বদল করা হয়নি। রাতারাতি যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে এলাকার মানুষের ব্যবহারে আসা পুকুরটি ভরাট করে চুরি করা হচ্ছে।’’

এ দিকে, এলাকায় গিয়ে দেখা গেল পুকুরের বেশ কিছু অংশে মাটি পড়ে আছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাতেও। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত সেনগুপ্তের ক্ষোভ, ‘‘ফ্ল্যাট করার সময়ে ঠিক মতো মাপজোক করা হয়নি। পুকুরের প্রায় ১০ শতাংশ বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার নিকাশি নালাও বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কাটার সময় পাশের বাড়িরও ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। সুব্রতবাবুর দাবি, এ ব্যাপারে তাঁরা আদালতে মামলা করেছেন। পুরসভা, পুলিশ-প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পুকুরের মালিক বৃদ্ধা হরিমোতি সেন বর্তমানে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তাঁর পক্ষে ছেলে মৃণালকান্তি সেন বলেন, ‘‘আমাদের পুকুরের কিছুটা অংশ ভরাট করা হয়েছে। এর আগেও আমাদের আরও একটি পুকুর বেআইনি ভাবে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। তখন পুরসভায় অভিযোগ করলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাই এ বার আর কিছু জানাইনি।’’ অন্য দিকে, পুকুর ভরাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘প্রথমত, আমার একার নামে জায়গা নয়। এজমালি সম্পত্তি, নিজস্ব ঘেরা প্রাচীরের মধ্যে বহুতল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাচীর ভাঙার সময়ে কিছু মাটি পুকুরের ধারে পড়ে আছে মাত্র। তা পরবর্তী কালে সরিয়ে নেওয়া হবে।’’

এ দিকে, পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে পুরসভা যথেষ্ট তৎপর বলে দাবি রামপুরহাটের তৃণমূল পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারির। তিনি বলেন, ‘‘ওই পুকুরে মাটি ফেলা হচ্ছে, সেই অভিযোগ পেয়েই মাটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি।’’

আর আশিসবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যত দূর মনে হয়, রাজনীতি করার জন্য এই অভিযোগ। তবে অভিযোগ সত্যি হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Executive Assistant Pond Filling Rampurhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy