সিউড়ি হাসপাতালে জখম সব্জি ব্যবসায়ী রূপক দে। —নিজস্ব চিত্র
২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও দুবরাজপুরে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি।
বৃহস্পতিবার রাতেই ডাকাত দলের হামলায় আহত ব্যবসায়ী রূপক দে-কে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দিয়েছিল সিউড়ি হাসপাতাল। কিন্তু পরিজনেরা তাঁকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুরেরর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। দুষ্কৃতীদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে কড়ে আঙুল-সহ বাঁ হাতের বেশ খানিকটা ঝুলে পড়েছে। চিকিৎসকেরা তা জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভর সন্ধ্যায় দুবরাজপুর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে রূপকবাবুর বাড়িতে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্ত্রী ও দুই স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে দুবরাজপুরের রামসীতা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় থাকেন পেশায় সব্জি ব্যবসায়ী রূপকবাবু। দুবরাজপুর পুরসভার পাশে তাঁর একটি সব্জি আড়ত রয়েছে। পরিবারের দাবি, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়িতে ঢুকে তিন মুখঢাকা অস্ত্রধারী দুষ্কৃতী টানা ৪০ মিনিট ধরে তাণ্ডব ও লুঠপাট চালায়। বাধা দিতে গিয়েই জখন হন রূপকবাবু। কিন্তু যে ভাবে ওই ব্যবসায়ীকে জখম করেছে দুষ্কৃতীরা, তাতে শুধু ডাকাতিই প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল না কি অন্য কোনও কারণ— তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগে ঘরের মধ্যে কার্যত রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই কারণে একই প্রশ্ন পুলিশের মনেও। দুবরাজপুর থানা তিন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তবে, জট খুলেছে বলে এখনও পর্যন্ত খবর নেই।
শুক্রবার স্বামীর কাছে দুর্গাপুরের ওই হাসপাতালে গিয়েছেন রূপকবাবুর স্ত্রী মালাদেবী। বিগত কিছু দিন থেকেই কে বা কারা তাঁদের বাড়ির উপর নজর রাখছিল বলে দাবি করেছেন মালাদেবী। তিনি ঘটনার পরই বলেছিলেন, ‘‘প্রায়ই রাতে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ পেতাম। একবার মোটরবাইক চুরির ঘটনাও ঘটেছে। যদিও পুলিশর তৎপরতায় তা ফেরত পাওয়া গিয়েছিল।’’ সে সব দিকে ইঙ্গিত করেই মালাদেবীর আশঙ্কা, তাঁদের বাড়ির উপর রাখা হচ্ছিল। তাণ্ডবের সময় দুষ্কৃতীরা তাঁর মুখহাত বেঁধে দিয়েছিল।
তদন্তকারীদের প্রশ্ন, আশঙ্কা থাকলে ডিসেম্বরের রাতে ৭টা পর্যন্ত সদর দরজা কেন খোলা ছিল। রূপকবাবুর কাঁচা টাকার কারবার। বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরের বাজার বন্ধ। তাই ঘরে বেশ কিছু কাঁচা টাকা ছিল বলে দুষ্কৃতীরা অনুমান করতেই পারে। কিন্তু আদতে কত টাকা ডাকাতি হয়েছে, সেটাই স্পষ্ট নয়। ডাকাতিটা অজুহাত মাত্র, ব্যবসায়ীকে আঘাত করাই কি মূল লক্ষ্য ছিল? ওই ঘটনায় এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy