Advertisement
০৬ মে ২০২৪

প্রেমিকের সঙ্গে মাকে যেতে বাধা দিয়ে খুন ১২ বছরের কিশোর

ঘরে বাবা নেই। সেই ফাঁকে মা পালিয়ে যাচ্ছিলেন প্রেমিকের সঙ্গে। বাধা দিয়েছিল ছেলে। অভিযোগ, তাতেই খাপ্পা মায়ের প্রেমিক ধারালো অস্ত্রের কোপে মেরে ফেলল বারোর বছরের ছেলেটিকে।

টাটকা: এখানেই পড়ে ছিল বিকাশের দেহ। নিজস্ব চিত্র

টাটকা: এখানেই পড়ে ছিল বিকাশের দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গাজলঘাটি শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

ঘরে বাবা নেই। সেই ফাঁকে মা পালিয়ে যাচ্ছিলেন প্রেমিকের সঙ্গে। বাধা দিয়েছিল ছেলে। অভিযোগ, তাতেই খাপ্পা মায়ের প্রেমিক ধারালো অস্ত্রের কোপে মেরে ফেলল বারোর বছরের ছেলেটিকে। নিহত ছেলের দেহ পুকুর পাড়ে ফেলে দিয়ে প্রেমিকের সঙ্গেই মা চম্পট দেন বলেও অভিযোগ।

বুধবার রাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির প্রত্যন্ত বড়জুড়ি গ্রামের এই ঘটনার কথা জেনে শিউরে উঠেছেন এলাকার বাসিন্দারা। নিহত বিকাশ বাউরি স্থানীয় বড়জুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বড়জুড়ির চালিবাড়িডি এলাকায় বাবা অজিত বাউরি, মা বসমাতা, ভাই কিষাণ ও ঠাকুমা যামিনীর সঙ্গে থাকত বিকাশ। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, অজিতবাবু স্থানীয় পিড়রাবনি শিব গাজনে ভোক্তা হয়েছিলেন বলে বুধবার রাতে বাড়িতে ছিলেন না। কিষাণ বড়জুড়ির বনপাড়ায় জেঠুর বাড়িতে গিয়েছিল। বছর দশেকের জেঠতুতো ভাই গৌরাঙ্গ ঘটনাচক্রে ওই রাতে বিকাশের বাড়িতে ছিল। গোটা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গৌরাঙ্গ।

আরও পড়ুন:বিকাশের গলায় কোপ দেখেই ধাঁ গৌরাঙ্গ

বৃহস্পতিবার গৌরাঙ্গ জানায়, যামিনীদেবী ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। বিকাশের সঙ্গে সে মোবাইলে ভিডিও দেখছিল। রাত ৮টা নাগাদ বড়জুড়ি সংলগ্ন ভিড়িঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম বাউরি বিকাশদের বাড়িতে আসে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিকাশের মায়ের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই উত্তমের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে আগে দুই পরিবারের ঝামেলাও হয়েছে। তবে, সম্পর্ক কাটেনি। বুধবার রাতেও উত্তম বসমাতার বাড়িতে আসে। গৌরাঙ্গ পুলিশকে জানিয়েছে, বসমাতার সঙ্গে গল্প করতে করতে বাড়িতে বসে উত্তম মদও খেয়েছিল। কিছুক্ষণ পরেই বসমাতাকে সে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে চায়। বসমাতাও রাজি হয়ে যান। মা ওই ব্যক্তির সঙ্গে চলে যাবে শুনেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে বিকাশ। রেগে উত্তমকে ঠেলাও মারে বিকাশ। অভিযোগ, এর পরেই বাড়িতে থাকা একটি কাটারি তুলে নিয়ে বিকাশের গলায় কোপ মারে উত্তম। এ দিন সকালে বিকাশের নলি কাটা দেহ তার বাড়ি থেকে দুশো মিটারের মধ্যেই একটি বাঁধের পাড়ে তাল ও খেজুর গাছের নীচে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

গঙ্গাজলঘাটি থানায় স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন অজিতবাবু। শুধু বলছেন, “প্রেমিক চোখের সামনে নিজের ছেলেকে খুন করল দেখেও স্ত্রী চুপ করে রইল! ভাবতে পারছি না!’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।’’ উত্তমের বাড়ির লোকেরাও ঘটনার পর থেকে পলাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Love Story Mother Son
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE