হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায় কৃতী শবনম খাতুন ও ফারহানা তসলিম। —নিজস্ব চিত্র।
একই পাড়ায় পাশাপাশি দু’টি বাড়ি। দুই বাড়ির দুই মেয়ের মধ্যে খুব বন্ধুত্ব। আর অনেক মিল। দু’জনেরই প্রিয় বিষয় অঙ্ক। দু’জনেরই ইচ্ছা বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার। আর এ বারের হাইমাদ্রাসা পরীক্ষার মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে দু’ জনেই।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থানার রসুলপুর হাইমাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী শবনম খাতুন এবং ফারহানা তসলিম। ৭৪৬ পেয়ে শবনম রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে। আর ফারহানা পেয়েছে ৭৩৭ নম্বর। সে রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। দুই কৃতী মেয়ের সাফল্যের খবরে খুশির হাওয়া রসুলপুর বাজারে।
শবনমের বাড়ি পাত্রসায়রের আলিপুর গ্রামে। বাবা শেখ মহম্মদ আলাউদ্দিন পেশায় ব্যবসায়ী। মা গুলচিহারা বেগম ছাপোষা গৃহবধূ। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে শবনম মেজ। ছোটবেলা থেকেই রসুলপুরে জেঠুর বাড়িতে থেকে মানুষ হয়েছে সে। মেয়ের সাফল্যে মধ্যবিত্ত পরিবারটিতে অনেক দিন পরে উৎসবের মেজাজ এসেছে। খবর পেয়েই ফারহানের মা আলিপুর থেকে সোজা চলে এসেছেন রসুলপুরে। তিনি বলেন, “ছোট থেকেই মেয়েটার পড়াশোনায় খুব আগ্রহ। জেঠুর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছে। আমরা শুধু চাই ও লেখাপড়া শিখে অনেক বড় হোক।’’
তাই বলে দিনের মধ্যে সর্বক্ষণ শবনম বইয়েই মুখ গুঁজে থাকে, এমনটা মোটেও নয়। সে জানায়, পড়াশোনার ফাঁকে টিভি দেখতে ভাল লাগে তার। পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই আশা করেছিল মেধা তালিকায় নাম থাকবে। এখন তার ইচ্ছা ডাক্তার হয়ে অনেক অনেক মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।
ইন্দাস হাইস্কুলের গ্রন্থাগারিক মহম্মদ মহসিন এবং গৃহবধূ ইসমত আরা বেগমের এক ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে বড় ফারহানা। মেধাবী ছাত্রীটি বলে, “ভাল পরীক্ষা দিয়েছিলাম। জানতাম ভাল রেজাল্ট হবে। মেধা তালিকায় নাম থাকতে পারে বলে একটু আশাও ছিল।” সেও চায় বড় হয়ে ডাক্তার হতে। আর ফারহানার মা ইসমত আরা শুধু চান মেয়ে তার ইচ্ছে মতো করে যাতে বড় হয়। অনেক বড় হয়। তিনি বলেন, “মেয়েটার দু’চোখে অনেক স্বপ্ন। ও যতদূর পড়তে চাইবে আমরা ততদূর ওকে পড়াব।”
দুই কৃতী মেয়ের সাফল্যে খুশি রসুলপুর হাইমাদ্রাসার শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক নৌশাদ আলি বলেন, “এ বার ১২৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। ১১২ জন পাশ করেছে। শবনম আর ফারহানা ছাড়াও নইমুদ্দিন মণ্ডল ৭২৩ পেয়ে রাজ্যের মধ্যে সতেরো নম্বরে রয়েছে। ওদের জন্য আমরা সবাই গর্বিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy