নিম্নচাপের লাগাতার বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে পড়ল বাঁকুড়া শহরের নন্দনপল্লি এলাকা। রাস্তা ছাপিয়ে জল ঢুকল বেশ কয়েকটি বাড়িতে। অন্য দিকে, জমা জলে বাঁকুড়া শহরের একাধিক রাস্তা প্লাবিত হওয়ায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হয় বাঁকুড়ায়। শুক্রবার ভোর থেকে লাগাতার বৃষ্টি চলে জেলা জুড়ে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বাঁকুড়ায় বৃষ্টি হয় ৭৫ মিলিমিটার। লাগাতার এই বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। বাঁকুড়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দনপল্লি এলাকায় মূল নিকাশি নালা উপচে জল বইতে শুরু করে রাস্তা দিয়ে। প্রায় হাঁটু সমান উচ্চতায় রাস্তা দিয়ে জল বইতে থাকায় কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে এলাকার স্কুল কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে অফিসযাত্রীরা আটকে পড়েন নিজের নিজের বাড়িতেই। রাস্তা ছাপিয়ে এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকে পড়ে জল।
এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার দুপুরে ওই এলাকায় যান বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘নিকাশির যথাযথ ব্যবস্থা না করে মোটা কাটমানির বিনিময়ে ইচ্ছেমতো বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দিচ্ছে বাঁকুড়া পুরসভা। পরিকল্পনাবিহীন ভাবে গড়ে ওঠা বাড়ি ও আবাসনে নিকাশি নালার জল আটকে এমন পরিস্থিতি তৈরী করছে।’’
বিধায়কের অভিযোগ মানতে চায়নি বাঁকুড়া পুরসভা। উপপুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজ বলেন, ‘‘নিকাশির সমস্যা থাকায় ওই এলাকায় বাড়ি তৈরির অনুমোদন বন্ধ রেখেছে পুরসভা। তার পরেও ভারী বৃষ্টিতে এমন সমস্যা তৈরি হচ্ছে নন্দনপল্লি এলাকায় । আমরা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারকে এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছি।’’ উপপুরপ্রধান পাল্টা বিজেপি বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘সাড়ে চার বছর ধরে বিধায়ক কাটমানি খাচ্ছেন। আর ছ’মাস খেয়ে নিন। তার পর কাটমানি খাওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। বিধায়ক নিজে কাটমানি খান বলে সব ক্ষেত্রেই উনি কাটমানি দেখতে পান।’’
ভারী বৃষ্টিতে শুধু নন্দনপল্লি এলাকাই নয়, শুক্রবার সকালে জমা জলে প্লাবিত হয় বাঁকুড়া শহরের একাধিক রাস্তা। শহরের ভৈরবস্থান মোড় ও সতীঘাট মোড় এলাকায় হাঁটু সমান জল জমে যাওয়ায় ওই রাস্তাগুলি দিয়ে যাতায়াত বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। হাঁটুসমান জল ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে রীতিমত নাকাল হতে হয় বাসিন্দাদের। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও তৈরি হয় সমস্যা।