Advertisement
E-Paper

‘বিভ্রান্তিকর’ ছবির পাল্টা নতুন বোর্ড

সঙ্গীতভবনের সামনে হিন্দি ও ইংরেজিতে ভবনের নাম লেখা বোর্ডটিকেই প্রচারের প্রধান লক্ষ্য করা হয়েছিল। শুক্রবার সেখানেই বসল নতুন বোর্ড।

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০২:০৭
বোর্ড: বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

বোর্ড: বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীতে বিভিন্ন ভবন, বিভাগের নামফলকে বাংলা ভাষা ব্রাত্য— ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় এমন প্রচার চলছিল কিছু দিন ধরেই।
সঙ্গীতভবনের সামনে হিন্দি ও ইংরেজিতে ভবনের নাম লেখা বোর্ডটিকেই প্রচারের প্রধান লক্ষ্য করা হয়েছিল। শুক্রবার সেখানেই বসল নতুন বোর্ড। যাতে প্রথমেই রয়েছে বাংলা, তার পরে যথাক্রমে হিন্দি ও ইংরেজি।

‘ফেসবুক’-এ সম্প্রতি ঘুরছিল একটি ‘মেসেজ’। যাতে সঙ্গীতভবনের সামনে হিন্দি ও ইংরেজিতে ভবনের নাম লেখা বোর্ডের ক্যাপশন করা হয়েছিল ‘বাংলা নেই!’ সেই ‘মেসেজ’ নিয়েই আপত্তি তোলেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া এবং কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ‘মেসেজ’টি ‘অর্ধসত্য’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’। কারণ, হিন্দি ও ইংরেজিতে
লেখা বোর্ডের কাছেই রয়েছে বাংলা হরফে লেখা বোর্ড। ‘ফেসবুক’-এর ছবিতে যা দেখা যাচ্ছে না। কর্মিসভার সভাপতি দেবব্রত (গগন) সরকার এবং
অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘এটা নিয়ে কথা ওঠার মানে ছিল না। তবু আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে নতুন করে বাংলাতেও বোর্ড বসানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত।’’ বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যও এ বিষয়ে সহমত।

বিশ্বভারতী চত্বরে মূল রাস্তা থেকে সঙ্গীত ভবনে ঢোকার মুখে বাংলায় লেখা বোর্ড রয়েছে। যদিও ভবনের প্রবেশপথের কাছে থাকা বোর্ডের লেখা ইংরেজি ও হিন্দিতে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের বোর্ডে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি হরফে নামাঙ্কন রয়েছে। চিনা ভবনের সামনে তিনটি ভাষায় লেখা আলাদা আলাদা তিনটি বোর্ড রয়েছে। ছাতিমতলা বা উপাসনাগৃহের ক্ষেত্রেও বাংলায় লেখা আলাদা বোর্ড আছে। ইংরেজি, হিন্দি হরফ রয়েছে অন্য বোর্ডে। তবে এখনও কয়েকটি বিভাগ ও ভবন রয়েছে, যেখানে বাংলায় লেখা কোনও বোর্ড না থাকলেও রয়েছে ইংরেজি, হিন্দি ভাষার বোর্ড। এমনই বোর্ড ছিল সঙ্গীতভবনের সামনেও। শুক্রবার সেটি তুলে তিনটি ভাষায় লেখা নতুন বোর্ড লাগানো হয়েছে।

বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের দাবি, গত জানুয়ারি মাসে ‘কেন্দ্রীয় রাজভাষা প্রকোষ্ঠ’-এর প্রতিনিধিদল বিশ্বভারতী পরিদর্শনে এসেছিল। কেন্দ্রীয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দি ভাষার ব্যবহার ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখাই মূল উদ্দেশ্য ছিল। ভাষা হিসেবে হিন্দির ব্যবহার ঠিকমতো করা না হলে কয়েকটি অনুদান বাতিল করা হতে পারে, দলটি তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিল বলেও সেই সূত্রের দাবি। তখন বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগ ও ভবনে বাংলায় লেখা বোর্ডের পাশে হিন্দি, ইংরেজি লেখা বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, সেই হিন্দি-ইংরেজিতে লেখা বোর্ডগুলির ছবি তুলে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় প্রচার করার চেষ্টা হচ্ছে— বিশ্বভারতী থেকে বাংলা ভাষা উধাও হয়ে যাচ্ছে, যা ‘বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের আশা, ‘‘নতুন বোর্ড লাগানোর পরে অন্তত গুজব বন্ধ হবে।’’ গত ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্বে এসে যে সমস্ত বিভাগ বা ভবনে বাংলায় লেখা বোর্ড নেই, সেখানে বাংলা আনার কথা ভেবেছিলেন সবুজকলি। নির্দেশ জারি হয়েছিল— যে সমস্ত বোর্ডে বাংলা হরফ নেই, সেখানে বাংলা, তার পরে যথাক্রমে হিন্দি ও ইংরেজিতে নাম লিখতে হবে। কাজও শুরু হয়। কিন্তু সমাবর্তন, বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ব্যস্ততা এবং গরমের ছুটি প়ড়ে যাওয়ায় তা শেষ হয়নি।

Visva Bharati University Sangeet Bhavana বিশ্বভারতী সঙ্গীতভবন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy