শোকস্তব্ধ মৃতের স্ত্রী। (ইনসেটে) সুশীল রায়। —নিজস্ব চিত্র
এক নৈশ্য প্রহরীর অপমৃত্যুতে রহস্য দানা বেঁধেছে সাঁইথিয়ায়। রবিবার সন্ধ্যায় সাঁইথিয়ার তালতলা এলাকায়, বহরমপুর যাওয়ার রাস্তার ধার থেকে সুশীল রায়ের (৪৭) দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের পরিজনদের দাবি, সুশীলের পেটের কাছে ডান দিকে পোড়া দাগ ছিল। শরীরের নানা অংশে আঘাতের চিহ্নও ছিল।
সুশীলের ছেলে দীপকের দাবি, ‘‘কেউ বা কারা বাবাকে খুন করেছে।’’ তবে সোমবার রাত পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিজনদের প্রশ্ন, সুশীল নিজের মতোই থাকতেন। কারও সঙ্গে তেমন বিবাদও ছিল না। সেই লোককে কেউ খামোকা খুন করতে যাবে কেন? খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশও। তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, অতিরিক্ত মদ খেয়ে পড়ে গিয়েই কোনও ভাবে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। সব দিক মাথায় রেখেই পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশীলের বাড়ি সাঁইথিয়ার সাত নম্বর ওয়ার্ডে। সাঁইথিয়া-তালতলা এলাকার বহরমপুর যাওয়ার রাস্তার ধারের একটি চালকলে রাত পাহারার কাজ করতেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশীলের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী সুনীতাদেবী ও ছেলে দীপককে নিয়েই সংসার। রবিবার সন্ধ্যায় স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে কার্যত সংজ্ঞাহীন স্ত্রী। পরিজনদের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুশীল ওই চালকলের কাজে যাওয়ার জন্যে বাড়ি থেকে বের হন। আর ফেরেননি। অনেক সময় রাত পাহারার কাজ সেরে সাঁইথিয়া স্টেশন রোডে এক আত্মীয়ের হোটেলেও কাজ করতেন। তাই সব দিন বাড়ি ফিরতেন না।
ছেলে দীপক জানায়, বাবা তিন দিন না ফেরায় রবিবার দুপুরে হোটেলে ফোন করে জানতে পারি, এত দিন সেখানেও আসেননি সুশীল। পরে চালকলের ম্যানেজারকে ফোন করে বাবার খোঁজ পান দীপক। দীপকের কথায়, ‘‘ম্যানেজার জানান বাবা লেটপাড়ার কাছে রাস্তার ধারে পড়ে আছে!’’ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই পুলিশ অবশ্য সুশীলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ততক্ষণে তাঁর অবশ্য মৃত্যু হয়েছে। কেন মৃত্যু? ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তা বোঝা যাবে, জানিয়েছে পুলিশ। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এ দিকে, চালকল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, সুশীলের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই তাঁর পাড়ার লোকজন চালকলে চড়াও হয়ে কর্তৃপক্ষকে হেনস্থা করে। রবিবার সকালেই সুশীল চালকল থেকে চলে যান বলে দাবি ম্যানেজার অসীম মণ্ডলের। তাঁর কথায়, ‘‘ওনার অপমৃত্যুতে আমরাও কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু, কাজের জায়গায় ভাঙচুর কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy