বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে কালীকে নিজের হাতে সাজাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
গত বছরের মতো এ বারও শারদোৎসব কেটেছে জেলে। কালীপুজোতেও তাঁর জেলবন্দি দশা কাটার আশা দেখছেন না অনুগামীরা। ফলে, এ বারও বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজো হবে আড়ম্বরহীন।
জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি এ বার অন্তত কালীপুজোয় থাকতে পারবেন বলে অনেকেই আশা করেছিলেন।অনুব্রত মণ্ডল না-থাকায় আড়ম্বরহীন ভাবেই এই পুজোর আয়োজন করা হবে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “পুজো তো বন্ধ করা যায় না। পুজো যেমন হয়, তেমনই হবে। দলের কর্মীরাই দায়িত্ব নিয়ে সেই পুজোর আয়োজন করবেন।”
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর জাঁকজমক শুরু হয় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যতদিন গিয়েছে দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পুজোর আয়োজনও। মাঝে কেবল মাতৃবিয়োগ ও স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে দেবীকে নিজের হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০২০ সালে কালীকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। ২০২১ সালে সোনার মুকুট,বাউটি, বাজুবন্ধন, কানের দুল,গলার হার, হাতের আংটি, কোমর বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গ।নায় কালী প্রতিমাকে সাজিয়েছিলেন অনুব্রত। গত বছর গরু পাচার মামলায় অনুব্রত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি বদলে যায়।
এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি অনুব্রত। এ বারও তিনি দেবীকে নিজের হাতে সাজাতে পারবেন না—এক রকম ধরেই নিয়েছেন দলে তাঁর অনুগামীরা। সেই কারণে এ বারও পুজো হবে বিশেষ জাঁকজমক ছাড়া। তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি বোলপুরে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলা দলীয় কার্যালয় তৈরি হয়েছে কোন পথে, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ পুর-প্রতিনিধি সহ চার জনকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে ইডি। দলীয় কার্যালয়ে থাকা মা কালীর বিপুল পরিমাণ গয়নাও তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে বলে সূত্রের খবর। সে গয়না দিয়েছিলেন যে ব্যবসায়ী, তাঁকেও আগে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
এই সব কিছু মাথায় রেখে বিষয়টি নিয়ে এ বারও সতর্ক রয়েছে দল। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বছর যেটুকু গয়না পরানো হয়েছিল, এ বছর তার থেকেও কম, নামমাত্র অলঙ্কারে সাজানো হবে কালীকে। মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “গত বছরের মতো এ বারও চাঁদা তুলে পুজো হবে।” কত গয়না পরানো হবে, সে প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘অন্তরের শ্রদ্ধাই বড় কথা, কতটা গয়না দেবীকে পরানো হল, বড় কথা নয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে নিয়ম রক্ষার্থে যেটুকু দিয়ে না-সাজালেই নয়, তা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy