—প্রতীকী চিত্র।
পথ দেখিয়েছিল সিউড়ি। পরে সে রাস্তায় হাঁটে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকও। এ বার অস্ত্র ছাড়া মহরম করার সিদ্ধান্ত নিল জেলার রামপুরহাটও।
রামপুরহাট শহরে অন্যতম পুরনো মহরম কমিটি হল বাজারপাড়া। এই কমিটির সভাপতি পদে সেলিম শেখ যেমন আছেন, তেমনই যুগ্ম সম্পাদক পদে আছেন চিরদীপ চট্টোপাধ্যায়। কমিটির সম্পাদক আলতাফ আলম রাজু বলেন, ‘‘এ বার আমাদের মহরমের শোভাযাত্রায় কোনও অস্ত্র থাকছে না। বদলে থাকছে মুর্শিদাবাদের কান্দির রায়বেঁশে দলের খেলা।’’ কমিটির সদস্যেরা জানাচ্ছেন, মহরম এবং দশমীর বিসর্জন এক সময়ে হওয়ার জন্যেই সম্প্রীতি এবং সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়েই অস্ত্র খেলা রাখা হচ্ছে না।
একই দিনে মহরমের মিছিল আর দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়ে টানাপড়েনের মাঝে প্রথম অন্য রকম বার্তা দিয়েছিল সিউড়ি। তাজিয়া আর লাঠি-তরোয়ালে নকল যুদ্ধ— মহরমের মিছিলে এমন দৃশ্যই চোখসওয়া। কিন্তু, চিরাচরিত সেই প্রথার বাইরে বেরিয়ে নিরস্ত্র মিছিলের উদ্যোগও এ বার দেখা যাচ্ছে। যেমন, তমলুক শহর ও আশপাশের ৯টি মহরম কমিটি সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেয় আগামী ১ অক্টোবর, মহরমের দিন অস্ত্র ছাড়াই মিছিল হবে।
মঙ্গলবার সকালে এলাকায় ঘুরতে কানে এল মহরম নিয়ে গান। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পাড়ার ১৪ থেকে ১৭ বছরের ছেলেরা গাইছে সেই গান। তাতে মাতম বা ক্রন্দনের সুর। পাড়ার বাসিন্দা, তৃণমূল নেতা ওয়াসিম আলি ভিক্টর এবং মীর হান্নান আলিরা জানালেন, বাজারপাড়া মহরম কমিটির এই সমস্ত স্কুল পড়ুয়ার দলই এ বার
মহরমের শোভাযাত্রায় মর্সিয়া গাইবে। মহরম কমিটি সদস্যরা জানাচ্ছেন, শিবতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের প্রতিমা যতক্ষণ না বিসর্জন হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারপাড়া মহরম কমিটির শোভাযাত্রা বের হবে না। অস্ত্রহীন সেই শোভাযাত্রায় খেলা প্রদর্শনের জন্য ইতিমধ্যে পাড়ায় বাঁশের ছোট ছোট লাঠি খেলার অভ্যাস চলছে। চলছে মর্সিয়াদের গানের রেওয়াজও।
অবশ্য বাজারপাড়া মহরমের শোভাযাত্রায় মুর্শিদাবাদ থেকে আসা রায়বেঁশে খেলার চল বছর পাঁচেকের পুরনো। এ বার ১৬ জনের সেই দলের তরফে আবু সালে জানালেন, রামপুরহাটে লাঠির ব্যালান্স, পিরামিড এই সমস্ত খেলা দর্শকদের দেখানো হবে। দশমী ও মহরম ঘিরে বাজারপাড়া মহরম কমিটির নিরস্ত্র শোভাযাত্রার সিদ্ধান্তকে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে স্বাগত জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy