তোড়জোড়: বিকনা ক্ষীরোদপ্রসাদ হাইস্কুলে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
সামগ্রিক ভাবে উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ল বাঁকুড়া জেলায়। তবে গত বারের তুলনায় ছাত্র সংখ্যা কমেছে অনেকটাই। যা নিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। শিক্ষকদের একাংশের দাবি, মাধ্যমিকের পরে, অনেকেই পেশাদার কারিগরিবিদ্যার দিকে চলে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, সরকারি চাকরিতে অনিশ্চয়তার জন্য অল্প বয়স থেকেই অনেকে কাজে ঢুকে পড়তে চাইছে। ফলে, ছেদ পড়ছে পড়াশোনায়।
আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এ বারের মাধ্যমিকে জেলা জুড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে দেখা গিয়েছে। গত বারের তুলনায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১,২৮৪ জন। উচ্চমাধ্যমিকেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে কি না, সে দিকে নজর ছিল। দেখা গিয়েছে, সামগ্রিক ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমেনি। এ বার মোট ৩৫,১০৭ জন ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলেছেন। গত বারের তুলনায় ৩১৫ জন পরীক্ষার্থী এ বার উচ্চমাধ্যমিকে বেড়েছে। তবে কমেছে ছাত্রের সংখ্যা। গত বারের তুলনায় এ বার জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্র কমেছে ২৬১ জন। ছাত্রী বেড়েছে গত বারের তুলনায় ৫৭৬ জন।
জেলার তিনটি মহকুমাতেই গত বারের তুলনায় এ বার ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। সব থেকে বেশি বেড়েছে বাঁকুড়া সদর মহকুমায় (৩৩৩ জন)। এ ছাড়া, খাতড়া মহকুমায় ১৬০ জন ও বিষ্ণুপুর মহকুমায় ৮৩ জন ছাত্রী গত বারের তুলনায় এ বার বেশি রয়েছেন। অন্য দিকে, বাঁকুড়া সদর মহকুমায় গত বারের তুলনায় এ বার ছাত্র সংখ্যা বেড়েছে ৯৭ জন। অন্য দিকে, বিষ্ণুপুর ও খাতড়া মহকুমায় ছাত্র সংখ্যা কমেছে যথাক্রমে ২০১ ও ১৫৭ জন।
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতমচন্দ্র মাল বলেন, “ছাত্রীদের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্প রয়েছে। তা ছাড়া, পড়াশোনা করে ঠিক বয়সে বিয়ে করলে রূপশ্রী প্রকল্পের সাহায্যও মিলছে। এর ফলে উচ্চশিক্ষায় ছাত্রীদের হার ক্রমশ বাড়ছে।” ছাত্রসংখ্যা কম কেন, তা নিয়ে অবশ্য নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “কারিগরিবিদ্যার প্রতি আকর্ষণ অনেকেরই রয়েছে। হতে পারে, হাতের কাজ শিখে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েই নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাবে।”
বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সহ-সম্পাদক আশিস পাণ্ডের মন্তব্য, “সরকারি বা বেসরকারি কোনও ক্ষেত্রেই চাকরির নিশ্চয়তা নেই। তাই ছেলেদের পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ক্রমশ কমছে। কাজের খোঁজে তারা বাইরে চলে যাচ্ছে। মেয়েদের পক্ষে সেটা সম্ভব নয় বলেই তারা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।”
যদিও আশিসবাবুর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌতম দাস। তাঁর যুক্তি, কারিগরি বিদ্যা নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়াতেই ছাত্রদের একটা অংশ মাধ্যমিকের পরে গতানুগতিক পঠনপাঠনের বাইরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “ছাত্র সংখ্যা এমন কিছু কমেনি। দু’বছর আগের মাধ্যমিকে ছাত্রদের পাশের হার যেমন ছিল সেই অনুপাতেই এ বারের উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র সংখ্যা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy