E-Paper

থেঁতলে খুনের পরেই ওসি ‘ক্লোজ়’

ওই ঘটনায় শেখ শাকির, শেখ হাসু ওরফে শেখ আজমতকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে। মূল অভিযুক্ত মুজিবুল ও তাঁর দুই সঙ্গী শেখ রবিউল, শেখ রাজিবুল সহ বাকিরা অধরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১৯
অজয় নদের সেই পশ্চিম বড়কোলা ঘাট।

অজয় নদের সেই পশ্চিম বড়কোলা ঘাট। —নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম বড়কোলা গ্রামে পাথর দিতে থেঁতলে গরু কারবারিকে খুনের ঘটনার পরের দিনই কাঁকরতলার ওসি শামিম খানকে সরিয়ে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার রাতে শামিমকে পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ়’ করে তাঁর পরিবর্তে ওই থানার ওসি হিসাবে দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বুধবার রাত ৮টার কিছু পরে, কাঁকরতলা থানার অজয় নদ ঘেঁষা পশ্চিম বড়কোলায় থেঁতলে বছর পঞ্চাশের গরু কারবারি শেখ মতিনকে খুন করার অভিযোগ উঠে। গ্রামেরই নয় বাসিন্দার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মতিনের স্ত্রী নীরজা বিবি। নিহতের পরিবারের দাবি, মতিনের উপর পুরনো আক্রোশ ছিল গ্রামের শেখ মুজিবুল ও তাঁর সঙ্গীদের। অভিযোগ, মুজিবল ও তাঁর দলবলই বুধবার রাতে অজয়ের বড়কোলা ঘাট লাগোয়া একটি চায়ের দোকানে মতিনকে ডেকে নৃশংস ভাবে খুন করেছেন।

ওই ঘটনায় শেখ শাকির, শেখ হাসু ওরফে শেখ আজমতকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে। মূল অভিযুক্ত মুজিবুল ও তাঁর দুই সঙ্গী শেখ রবিউল, শেখ রাজিবুল সহ বাকিরা অধরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের এক দিকে ঝাড়খণ্ড আর অজয় পেরিয়েই পশ্চিম বর্ধমান। অভিযুক্তরা যে কোনও দিকে পালিয়ে যেতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। সূত্র ধরে তল্লাশি করা হচ্ছে।

খুনের কারণ কী, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে, ওই খুনের ঘটনার পরে এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা ওসি-কে রাতারাতি ‘ক্লোজ়’ করার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট। স্থানীয় সূত্রের খবর, শেখ মতিন এলাকার পারশুণ্ডী পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তৃণমূলের পারশুণ্ডী অঞ্চল সভাপতি উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে বা যারা এমন কান্ড ঘটিয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েতের কাজ এবং এলাকায় নানা বিষয়ে মতিনের সিদ্ধান্তই এক তরফা প্রাধান্য পাওয়া এবং এলাকায় কর্তৃত্ব বজায় রাখার মতো নানা বিষয়ে মতিনের প্রতি আক্রোশ ছিল মুজিবুলদের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে সেটা বাড়ে। সেটা চরম আকার নেয় পশ্চিম বর্ধমান সংযোগকারী অজয় নদের ঘাটকে কেন্দ্র করে।

জানা গিয়েছে, খয়রাশোলের পারশুণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই গ্রাম থেকেই সহজে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, জামুড়িয়া বা অন্য এলাকা যেতে সবচেয়ে সহজ রাস্তা অজয় পেরিয়ে যাওয়া। অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে চলে পারাপার। সে জন্য খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতি থেকে দরপত্র ডাকা হয়। বড়কোলা ঘাটের দায়িত্বে এখন গ্রামের ষোলো আনা। প্রতিদিন ওই ঘাটের হাঁক হয়। গ্রামের যে কেউ সেটা নিতে পারেন। এলাকা থেকে শোনা যাচ্ছে, মতিন ও তাঁর এক সঙ্গী যে দিন ঘাটের দায়িত্বে নিতেন, সেদিন এক ‘বিশেষ কারণে’ আয় বেড়ে যেত। সেটা নিয়েও মুজিবুলদের সঙ্গে মতিনদের দ্বন্দ্ব ছিল। বর্তমানে ঘাটটি খোলা থাকলেও গাড়ি থেকে টাকা আদায়ের জন্য কোনও লোক নেই। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

kankartala Murder

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy