E-Paper

নেশা বন্ধে দাওয়াই ‘জরিমানা’

স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে গ্রামে চলছিল মদ, তাড়ি ও গাঁজার ঠেক। গ্রামের বাইরে ঝুপড়ি বানিয়ে নেশার সামগ্রী বিক্রি করতেন গ্রামেরই কয়েকজন।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৩
সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি।

সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

নেশার দ্রব্য বিক্রি করলে ‘জরিমানা’ দশ হাজার টাকা। নেশা করে ঝামেলা পাকালে বা মারধর করলে ‘জরিমানা’ দু’হাজার টাকা। মদ-তাড়ি-গাঁজার ব্যবসা বন্ধ করতে গ্রামে একাধিক বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একথা জানিয়েছেন পাড়া ব্লকের উদয়পুর-জয়নগর পঞ্চায়েতের চিতরার গ্রাম ষোলোআনা কমিটি।

কমিটির দাবি, এই ঘোষণার পরেই রাশ টানা গিয়েছে নেশার সামগ্রীর কারবারে। গ্রামবাসীরা জানান, ছুটি থাকলে গ্রামের স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বোতল সাজিয়ে মদের আসর বসত। । দিনমজুরি করে পাওয়া টাকা অনেকে উড়িয়ে দিতেন। তাতে সাংসারিক অশান্তি ক্রমশই বাড়ছিল। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মাঝেমধ্যে হানা দিয়ে বন্ধ করে দিত মদ-তাড়ি-গাঁজার কারবার। নজরদারি ঢিলে হলেই ফের রমরমিয়ে শুরু হত নেশার সামগ্রী বিক্রি।

এই ছবি বদলাতে সক্রিয় হয় গ্রামের ষোলোআনা কমিটি। কমিটির সম্পাদক অমলচন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘গ্রামের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে কমিটির সদস্যেরা আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে গ্রামে চলছিল মদ, তাড়ি ও গাঁজার ঠেক। গ্রামের বাইরে ঝুপড়ি বানিয়ে নেশার সামগ্রী বিক্রি করতেন গ্রামেরই কয়েকজন। প্রথমে এর বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে পাড়া থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। স্বাক্ষর করেছিলেন গ্রামের দুই পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্যও। ষোলো আনা কমিটি জানায়, পুলিশ মদের ঠেক ভেঙে দিয়েছিল। কিন্ত পরে আবার শুরু হয় নেশার কারবার। পুলিশ জানিয়েছিল, নেশার কারবার পুরোপুরি বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে গ্রামবাসীকে।

এর পরেই ষোলাআনা কমিটি ওই সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির সম্পাদক অমল বলেন, ‘‘অবৈধ নেশার কারবার যাঁরা করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গ্রামে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে নেশার কারবার বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জরিমানা করা হবে।”

চিতরা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ দেবদাস রায় বলেন, ‘‘গরমের ছুটি শেষে স্কুল খোলার পরে দেখা যায়, দোতলায় একটি শ্রেণিকক্ষে ১৫টি মদের বোতল পড়ে রয়েছে। ষোলোআনা কমিটির সদস্যদের সে দৃশ্য দেখানো হয়। বিডিও (পাড়া) গৌতম মণ্ডল গ্রামবাসীর এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘ওই গ্রামে নেশার কারবার এখন
বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Drugs

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy