জনসংযোগ: সিআরপি পরামর্শ শিবির। খয়রাশোলে। নিজস্ব চিত্র
আধাসেনা পদে চাকরি পেতে হলে প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত? ওই পদের জন্য আবেদন করেছেন অথবা করবেন বলে মনস্থির করেছেন এমন শ’খানের স্থানীয় তরুণ, তরুণীকে ডেকে সে বিষয়ে পরামর্শ দিলেন সিআরপি আধিকারিকরাই। বৃহস্পতিবার সকালে খয়রাশোলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাকক্ষে ওই পরামর্শ শিবির হয়। আয়োজন করেছিল মাও-দমনে জেলায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপি-র সি-১৬৯ ব্যাটালিয়ন।
আধা সামরিক বাহিনীর লিখিত পরীক্ষা কতগুলি ধাপে, কী কী বিষয়ের উপরে হয়, শারীরিক যোগ্যতামান ও সক্ষমতা কেমন থাকা প্রয়োজন, কেমন করে হয় মেডিক্যাল টেস্ট— তার বিস্তারিত পাঠ দেন সি-১৬৯ ব্যাটালিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমানড্যান্ট শ্রী মধুসূদন। তিনি বলছেন, ‘‘সিআরপি, বিএসএফ, সিআইএসএফ, অসম রাইফেলস এর মতো কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখায় প্রায় ৫৫ হাজার শূন্যপদে লোক নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই অনলাইনে আবেদন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। অনেকেই আবেদন করেছেন বা করছেন। কিন্তু, ঠিক কী ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয় বা কী ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে যোগ্যতম প্রার্থী হয়ে উঠতে হয় তা অনেকেই জানেন না। তাই এই প্রয়াস। এলাকার ছেলেমেয়েরা যদি সুযোগ পায় তা হলে ভাল লাগবে।’’
হঠাৎ চাকরি প্রার্থীদের সাহায্যে কেন এগিয়ে এল কেন্দ্রীয় বাহিনী?
বাহিনীর কর্তারা মনে করাচ্ছেন, হঠাৎ নয়। এক সময় মাও প্রভাবিত বলে চিহ্নিত খয়রাশোলে ২০১৩ সালে এক কোম্পানি সিআরপি মোতায়েন করার পর থেকেই নানা রকম ভাবে জনসংযোগ বাড়ানোয় যুক্ত থেকেছেন বাহিনীর জওয়ান ও আধিকারিকরা।
কখনও প্রান্তিক মানুষের (মূলত আদিবাসী জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত) হাতে রান্নার বাসন, চাল, পোশাক, ঘরের চাল ছাইবার টিনের মতো নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া, কখনও পড়ুয়াদের হাতে বইপত্র, খাতা, পেন্সিল ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র, এমনকি খেলাধুলোর সরঞ্জামও উপহার দেওয়া হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিল বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করা।
সিআরপি আধিকারিকদের মতে, মানুষের আর্থিক কষ্টের সুযোগেই মাওবাদীরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করে। তেমন ঘটনা যাতে এখানে না ঘটে, অতীতে জনসংযোগ বাড়ানোর পিছনে এটাই ছিল কৌশল। বর্তমানে মাওবাদীদের গতিবাধি তেমন নজরে না এলেও জনসংযোগে ঘটতি হলে চলবে না। আধাসেনায় যোগ দিতে ইচ্ছুক এলাকার তরুণ-তরুণীদের পরামর্শ দেওয়ার পিছনেও রয়েছে সেই জনসংযোগের ভাবনা।
শিবিরে যোগ দেওয়া পাইগড়া গ্রামের রাজা ধীবর, জয়ন্ত বাগদি, নাকড়াকোন্দা গ্রামের শুভম ঘোষ, ভাগাবাঁধ থেকে পানমতি হাঁসদা, পূজা সরেনরা বলছেন, ‘‘অনেক কিছু জানলাম। তবে শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে কেমন প্রস্তুতি নেব, সে বিষয়ে দিন কয়েকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে ভাল হত।’’ সি-১৬৯ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিষয়টা যাতে করা যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy