Advertisement
E-Paper

হড়পা বান ঠেকাবে কি চেকড্যাম

শুখা জেলায় সেচের ব্যবস্থা বাড়াতে চেকড্যাম তৈরিতে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গত বর্যায় একের পর এক চেকড্যাম ভেঙে পড়ায় বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার বাসিন্দারা কেরোয়া গ্রামের কাছে নির্মীয়মান চেকড্যাম তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানালেন প্রশাসনের কাছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩২
নির্মীয়মান: এই চেকড্যাম ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: সুজিত মাহাতো

নির্মীয়মান: এই চেকড্যাম ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: সুজিত মাহাতো

শুখা জেলায় সেচের ব্যবস্থা বাড়াতে চেকড্যাম তৈরিতে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গত বর্যায় একের পর এক চেকড্যাম ভেঙে পড়ায় বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার বাসিন্দারা কেরোয়া গ্রামের কাছে নির্মীয়মান চেকড্যাম তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানালেন প্রশাসনের কাছে। বর্ষায় পাহাড়ি নদীর হড়পা বান ঠেকাতে সহনশীল চেকড্যাম তৈরির জন্য যাতে ঠিকমতো কাঁচামাল দেওয়া হয় এবং প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ত্রুটিমুক্ত করা হয়, সে দিকেও নজর দেওয়ার অনুরোধ রেখেছেন তাঁরা।

পুরুলিয়ার বেশিরভাগ নদী বা জোড়ে বছরের অন্য সময়ে তিরতির করে দল বইলেও বর্ষাকালে তাদের অন্যরূপ। পাহাড়ি এলাকার নদী বা জোড়গুলিতে বর্ষার সময়ে তোড়ে জল বয়ে যায়। ফলে এই জেলায় হাতে গোনা কয়েকটি জলাধার ছাড়া জেলায় জল ধরে রাখার তেমন কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বর্ষাকালে বয়ে যাওয়া জল ধরে রাখতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বান্দোয়ানের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জলতীর্থ প্রকল্প থেকে ২৫১টি চেকড্যামের শিলান্যাস করেন। পরের মাস থেকেই এই চেকড্যামগুলি নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

কিন্তু জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বড় বৃষ্টিতে একের পর এক চেকড্যাম ভাঙতে থাকে বিভিন্ন ব্লকে। বিশেষত চেকড্যামগুলির গার্ডওয়াল ভেঙে যায় বেশিরভাগ জায়গাতেই। কেথাও মূল ড্যামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জুলাইয়ে বলরামপুরের কুমারী নদীর উপরে নির্মীয়মান চেকড্যামের গার্ডওয়াল ভেঙে যায়। অগস্টের প্রথম সপ্তাহে ফের বলরামপুরের কুমারী নদীর উপরে নির্মীয়মান আরও একটি চেকড্যামের গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ে জলের তোড়ে। এরপরে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টির জলের তোড়ে পুরুলিয়া ২ ব্লকের চাকিরবনে যমুনাজোড়, বান্দোয়ানের টটকো নদী, রঘুনাথপুরের নীলডি চেকড্যাম, কাশীপুরের দৈকিয়ারির কাছে বেকো নদীর উপরে নির্মিত চেকড্যামের গার্ডওয়াল ভেঙে যায়।

কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলের তোড়ে ভেঙে পড়া ড্যামগুলির এই হাল দেখেই প্রশাসনকে লিখিত ভাবে নির্মাণ কাজ দেখভাল করার আবেদন জানিয়েছেন অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া ঘাটবেড়া-কেরোয়া পঞ্চায়েত এলাকার খেঁকরিডি, মণ্ডলকেরোয়া, কেরোয়া, দান্দুডি, মাহিলিটাঁড়, খৈরিটাঁড় প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা এলাকায় কেরোয়া নদীর উপর পূর্ত দফতরের তত্ত্বাবধানে নির্মীয়মান চেকড্যামের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই নদীতে বর্ষায় পাহাড় থেকে হড়পা বান নেমে আসার সময় প্রবল জলোচ্ছ্বাস থাকে। গত বছর এই এলাকাতেই কুমারী নদীর উপরে নির্মীয়মান দু’টি চেকড্যামের গার্ডওয়াল জলের তোড়ে ভেঙে পড়ায়, তাঁরা নির্মাণের দায়িত্বে থাকা লোকজনকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানান। কিন্তু তাঁরা গ্রামবাসীর কথায় আমল দেননি বলে অভিযোগ।

আদিত্য মণ্ডল, বিভূতি মণ্ডল, সোনারাম মাহাতো-সহ অনেকেই বলেন, ‘‘ঠিকাদারের লোকজনকে হড়পা বানের তেজ কতটা তা জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমলই দেননি।’’

বলরামপুরের বিডিও পৌষালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের ওই অভিযোগ পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের কাছে তা পাঠিয়েছি।’’ জেলা সভাধিপতি বলরামপুরের বাসিন্দা সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘কোন নদীতে বর্ষাকালে কেমন তোড়ে জল বয়ে যায়, তা এলাকার মানুষ জানেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলব।’’ পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার পীযূষকান্তি দত্ত বলেন, ‘‘নকশা অনুযায়ীই কাজ হচ্ছে।’’ যদিও এই নদীগুলির চরিত্র মেনে কি নকশা হয়েছে? সে প্রশ্নের সদুত্তর তাঁর কাছে মেলেনি।

Check Dam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy