Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Nalhati

গুজবে ফের বাড়িতে চড়াও

সিএএ ও এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক ও গুজবের জেরে ফের এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নলহাটি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

কুমারসন্ডার পরে বসন্ত গ্রাম। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে আতঙ্ক ও গুজবের জেরে ফের এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যায় নলহাটি থানার বসন্ত গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। সোমবার বিডিও (নলহাটি ১) ওই গ্রামে গেলে তাঁকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গ্রামের মহিলাদের ইন্টারনেটের প্রশিক্ষণ দেওয়ার নামে ওই মহিলা সিএএ এবং এনআরসি-র জন্য তথ্য সংগ্রহ করছেন। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে প্রশিক্ষণ চলছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। গ্রামীণ মহিলাদের আধুনিক ইন্টারনেট শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে দেশ জুড়ে ‘ইন্টারনেট সাথী’ প্রকল্প চালু হয়। টাটা ট্রাস্টস ও গুগলের উদ্যোগে মহিলাদের জন্য এই ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রকল্প চালু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে কিছু গ্রামের বাছাই করা কিছু মহিলাকে নলহাটি ১ ব্লকে দু’দিনের ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষিত মহিলারা আবার নিজেদের এলাকায় গিয়ে ১৫ থেকে ৪৫ বছরের সব মহিলাকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার পদ্ধতি শেখাচ্ছেন।

ব্লক অফিসে সেই প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন টুম্পা খাতুন। গুজবের জেরে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে, এই মর্মে তিনি নলহাটি থানা এবং বিডিও-র কাছে অভিযোগ করেন। সোমবার দুপুরে বিডিও জগদীশচন্দ্র বাড়ুই গ্রামবাসীদের সচেতন করতে গ্রামে গেলে তাঁদের একাংশ বিডিও-র গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মূলত গ্রামের মহিলারা বিডিও-কে আটকে রাখেন। পরে গ্রামের শান্তিরক্ষা কমিটির হস্তক্ষেপে বিডিও ঘেরাও মুক্ত হন। মর্জিনা বিবি, লিপিকা মাল, সানিয়া খাতুনেরা অভিযোগ করেন, ‘‘মোবাইল প্রশিক্ষণের নামে আমাদের থেকে আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি নেওয়া হয়েছে। কোনও বাড়িতে বলা হচ্ছে, পঞ্চায়েত থেকে সার্ভে করতে এসেছি। আবার অন্য মহিলার কাছে বলা হয়েছে, ব্লক থেকে পাঠিয়েছে।’’

মহিলাদের দাবি, এ ভাবে বসন্ত গ্রামের ৫৭০ জনের থেকে তথ্য নিয়েছেন ওই গ্রামেরই এক মহিলা (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত)। তাঁরা বলেন, ‘‘রবিবার আমার ওর কাছে জানতে গিয়েছিলাম, বিষয়টি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু তিনি তা না করে গ্রামের মহিলাদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করে দেন, আমরা তাঁর ঘরে ভাঙচুর চালিয়েছি। আজ বিডিও এসে ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করেও ভাঙচুরের কোনও প্রমাণ পাননি।’’ বিক্ষোভকারী মহিলাদের দাবি, তাঁরা যে যে তথ্য ওই মহিলাকে দিয়েছেন, তা ফেরত দিতে হবে। যে মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

গত শুক্রবার সকালে নলহাটি থানারই কুমারসন্ডা গ্রামে একই গুজবে গ্রামবাসীরা এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হন। পরে প্রশাসন গ্রামে গিয়ে মানুষজনকে সচেতন করায় এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিডিও (নলহাটি ১) বলেন, “এখন যেহেতু এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে আতঙ্ক চলছে, তাই কিছু মানুষ ভেবেছেন, সেই সংক্রান্ত সমীক্ষা হচ্ছে। গুজবের জন্যই এটা হয়েছে।’’ আজ মঙ্গলবার গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন বলেও বিডিও জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE