E-Paper

আবাসে নাম বাদ, কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ

রবিবার রাতে বাঁকুড়ায় আসে কেন্দ্রীয় দল। সোমবার বাঁকুড়া ১ ব্লক এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। এ দিন হিড়বাঁধ ব্লক অফিসে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা সেরে রওনা দেন মুশিয়াড়ার উদ্দেশে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৬
Picture of central team.

হিড়বাঁধের মশিয়াড়া পঞ্চায়েতের ভিতরে ও বাইরে ঘিরে ধরে ক্ষোভ মহিলাদের। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়

আবাস প্লাসের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়া নিয়ে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। প্রকল্প নিয়ে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আসা দলের প্রতিনিধিদের ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখানো হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার হিড়বাঁধের মুশিয়াড়ার ঘটনা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা বাছাইয়ে নতুন করে সমীক্ষা করতে হবে। দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে।

দুই সদস্যের ওই কেন্দ্রীয় দলের প্রধান মনোজ কুমার পরে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, “যাঁরা বাড়ি পাননি বলে অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের কারও কারও পাকা বাড়ি রয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। আবার কারও আড়াই একরের বেশি জমি রয়েছে। প্রকল্পের উপভোক্তা বাছাইয়ের শর্তেই ওঁরা বাদ পড়েছেন।” তবে সার্বিক ভাবে পরিদর্শনে কী উঠে আসছে, তা ভাঙতে চাননি তিনি। শুধু বলেন, “এখনই এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না। পরিদর্শন চলছে। যেখানে যেমন অভিযোগ উঠেছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

রবিবার রাতে বাঁকুড়ায় আসে কেন্দ্রীয় দল। সোমবার বাঁকুড়া ১ ব্লক এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। এ দিন হিড়বাঁধ ব্লক অফিসে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা সেরে রওনা দেন মুশিয়াড়ার উদ্দেশে। গ্রামে ঢুকে প্রথমে তাঁরা যান স্থানীয় এক বাসিন্দা জগদীশ রায়ের বাড়িতে। কাঁচা বাড়ি দেখিয়ে জগদীশের অভিযোগ করেন, সমীক্ষার তালিকায় নাম ছিল। তবে সদ্য প্রকাশিত আবাস প্লাসের তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ শুনে জগদীশের কাছে কিছু নথি দেখতে চান দলের সদস্যেরা। তাঁর নামে অনেক জমি রয়েছে বলে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে বলে প্রশাসনের তরফে বলা হলেও জগদীশের দাবি, “তিন বিঘার কিছু বেশি জমি আছে। তবে সেই জমি বর্গাদারদের দখলে রয়েছে।”

এর পরে, জগদীশের বাড়িতেই কেন্দ্রীয় দলের সামনে গ্রামবাসীর একাংশ প্রকল্প নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ জানাতে থাকেন। দলের সদস্যেরা তাঁদের মুশিয়াড়া পঞ্চায়েত অফিসে যেতে বলেন। তাঁরা পঞ্চায়েত অফিসে পৌঁছনোর আগেই দেখা যায়, আগে থেকে বহু গ্রামবাসী সেখানে রয়েছেন। পঞ্চায়েত অফিসে প্রতিনিধিদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নমিতা রায়, মায়া রায়েরা বলেন, “আমরা কাঁচা বাড়িতে বাস করি। তেমন রোজগারও নেই। অথচ বাড়ির তালিকায় আমাদের নাম নেই।” নীলিমা রায়ের আবার অভিযোগ, এলাকায় অনেকে আছেন, যাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। অথচ ছোট জায়গায় মাটির বাড়িতে থেকেও প্রকল্প থেকে বাদ পড়ছেন তাঁরা। বিক্ষোভ থেকে নতুন করে সমীক্ষার দাবি ওঠে। প্রতিনিধি দলের তরফে দাবি খতিয়ে দেখা ও কেন্দ্রের কাছে সমস্যা জানানোর আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে।

এ ছাড়া, গ্রামের দু’জায়গায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ির কাজ অসমাপ্ত পড়ে রয়েছে, এ দিন তা-ও নজরে পড়েছে প্রতিনিধিদের। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে শুরু হয়েছিল কাজ। প্রকল্প দেওয়ার নামে উপভোক্তাদের কাছে কেউ টাকা চেয়েছিলেন কি না, তা জানতে চান প্রতিনিধিরা। উপভোক্তাদের তরফে তেমন অভিযোগ জানাতে দেখা যায়নি। বিডিও (হিড়বাঁধ) আলমগীর হোসেন বলেন, “ওই প্রকল্পে উপভোক্তা বাছাইয়ে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। তা পূরণ না হওয়ায় অনেকে কাঁচাবাড়ির বাসিন্দা হলেও তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।”

পরিদর্শন নিয়ে হিড়বাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ মাজির কটাক্ষ, “বিরোধীরা কেন্দ্রের আবাস প্রকল্প নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু যা খবর তাতে শুনছি, প্রতিনিধিরা তো কোনও অভিযোগই খুঁজে পাচ্ছেন না।” বিজেপির হিড়বাঁধ মণ্ডল সভাপতি অতনু হালদারের পাল্টা দাবি, “ব্লক প্রশাসন কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের মূল সমস্যার জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে না।” প্রশাসন কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের হিড়বাঁধ এরিয়া কমিটির সম্পাদক শ্যামাপদ মাজিও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pradhan Mantri Aawas Yojna Central Team

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy