Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bankura

পুরুলিয়ায় তল্লাশি, বাঁকুড়ায় বাজি বিক্রি

পুলিশ সূত্রের খবর, পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, আদ্রার মতো শহরাঞ্চলগুলিতে বাজি বিক্রি হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি চলছে।তবে বাঁকুড়ার বেশ কিছু জায়গায় এ দিন প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে।

(বাঁদিক)রোনিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাঁকুড়া শহরে গোলপার্ক মার্কেটে ঢেলে বিক্রি করা হচ্ছে আতশবাজি। শুক্রবার।(ডানদিকে)n তল্লাশি। পুরুলিয়ার জয়পুরের ঝাড়খণ্ড সীমানায়। নিজস্ব চিত্র।

(বাঁদিক)রোনিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাঁকুড়া শহরে গোলপার্ক মার্কেটে ঢেলে বিক্রি করা হচ্ছে আতশবাজি। শুক্রবার।(ডানদিকে)n তল্লাশি। পুরুলিয়ার জয়পুরের ঝাড়খণ্ড সীমানায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

ঝাড়খণ্ড থেকে বাজি আসা ঠেকাতে রাস্তায় নাকা তল্লাশি শুরু করে দিল পুরুলিয়ার পুলিশ। এ দিকে, শুক্রবার বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় ডিআইবি অফিস সংলগ্ন এলাকাতেই দেখা গেল, প্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরনের আতশবাজির সম্ভার সাজিয়ে বসেছেন কিছু ব্যবসায়ী।

পুরুলিয়ায় মূলত বাজি বিক্রি শুরু হয় কালীপুজোর দিন দু’য়েক আগে থেকে। অনেকেই রাস্তার পাশে ছোট তক্তপোশের উপরে বাজি সাজিয়ে বিক্রি করেন। এ বার আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেই তৎপরতা শুরু করেছে থানাগুলি। পুলিশ সূত্রের খবর, পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, আদ্রার মতো শহরাঞ্চলগুলিতে বাজি বিক্রি হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি চলছে। তবে বিভিন্ন থানা দাবি করেছে, বাজার ঘোরার পরে দেখা গিয়েছে, কোথাও বাজি বিক্রি হচ্ছে না। পুরুলিয়া শহরের ব্যবসায়ী তথা বাজি বিক্রেতা গৌতম চেল বলছেন, ‘‘হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে বাজি, বিক্রি করা চলবে না। তা ছাড়া, করোনার সময়ে বাজির কারণে অসুস্থদের আরও সমস্যা বাড়বে। এটা জানার পরেই এ বার বাজি বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছি।”

সূত্রের খবর, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই জেলা পুলিশের শীর্ষমহল থেকে পুরুলিয়াতে বাজি আমদানি ও বাজারে বাজি বিক্রি বন্ধ করতে থানাগুলিকে তৎপর হওয়ার নির্দেশ পাঠানো হয়। পুরুলিয়ায় আতশবাজি আসে কলকাতা থেকে। আর ঝাড়খণ্ড থেকে ঢোকে প্রচুর শব্দবাজি। ঝালদা, নিতুড়িয়া, বান্দোয়ানের মতো পড়শি রাজ্যের সীমানায় থাকা থানাগুলি শুক্রবার থেকেই রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে নাকা তল্লাশি শুরু করেছে। ঝালদা মহকুমার তিন থানা ঝালদার তুলিন, বাঘমুণ্ডির মাঠা ও জয়পুরের কাঠালট্যাঁড় এলাকায় বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড থেকে আসা সমস্ত গাড়ির ‘ডিকি’ (বুট) খুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে বাজি যাতে পুরুলিয়াতে না ঢোকে, সে জন্য প্রথম থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ বার নাকা তল্লাশিতে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

তবে বাঁকুড়ার বেশ কিছু জায়গায় এ দিন প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় ডিআইবি অফিস সংলগ্ন এলাকায় বিক্রি হয়েছে নানা ধরনের রঙিন ফুলঝুরি, সাপবাজি, তুবড়ি। একই ছবি দেখা গিয়েছে শহরের চকবাজার ও লালবাজার এলাকাতেও। অল্প কিছু ক্রেতাকে বাজি কিনতে দেখা গিয়েছে এ দিন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কেন বাজি বিক্রি করছেন, সে প্রশ্নের জবাবে শহরের কয়েকজন বাজি বিক্রেতা বলেন, “আমরা তো জানি শব্দবাজি নিষিদ্ধ। আতশবাজিও যে বিক্রি করা যাবে না, সেটা আমাদের জানা ছিল না।”

বাঁকুড়া শহরের কাটজুড়িডাঙার বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, “করোনা-পরিস্থিতিতে আদালত বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় স্বস্তি পেয়েছি। বাজির ধোঁয়া থেকে দুষণ ছড়ায়। পুলিশ ঠিক ভাবে তৎপর হলে এ বার হয়তো সেই দুষণের হাত থেকে রক্ষা মিলবে।” জেলার বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, দুর্গাপুজোয় হাইকোর্ট নানা নির্দেশ দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা ঠিক ভাবে পালন করা হয়নি। একই ভাবে বাজি নিষিদ্ধ করার নির্দেশও কাগজে কলমেই রয়েযাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও অবশ্য বাজি বিক্রি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাজি কারখানাগুলিই বন্ধ করার উদ্যোগ হচ্ছে নানা জায়গায়। তাতে বাজারে বাজির জোগান এমনিতেই কমবে। জেলার প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দিয়েছি, কোথাও বাজি বিক্রি হচ্ছে দেখলেই দ্রুত যেন বাজেয়াপ্ত করা হয়।” তিনি যুক্ত করেন, “আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পুলিশের তরফে যা পদক্ষেপ করার, করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Purulia Police Fire cracker Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE