Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
ভর্তিতে ‘তোলাবাজি’ রুখতে পদক্ষেপ
Admission

পুলিশের নোটিস জেলার কলেজেও

ভর্তির সময়ে তোলাবাজির মুখে পড়তে হচ্ছে এমন পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে জেলার অধিকাংশ থানা ও সে সব এলাকার কলেজের সামনে ই-মেল এবং হোয়াটস অ্যাপ নম্বর লিখে প্রয়োজনে নির্ভয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে বীরভূম পুলিশ।

বার্তা: ছাত্রভর্তিতে ‘তোলাবাজি’ রুখতে পুলিশের বিজ্ঞপ্তি। মঙ্গলবার সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে। নিজস্ব চিত্র

বার্তা: ছাত্রভর্তিতে ‘তোলাবাজি’ রুখতে পুলিশের বিজ্ঞপ্তি। মঙ্গলবার সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০১:১৪
Share: Save:

কলকাতা তো বটেই, মহানগরীর বাইরেও অনেক জায়গার কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ‘তোলাবাজি’র অভিযোগ উঠেছে।

বীরভূমে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও অভিযোগ না উঠলেও সতর্ক জেলা পুলিশ। ‘সমস্যা হলে, ভুক্তভোগী পড়ুয়ার পাশে রয়েছি’— কলেজে কলেজে এমনই বার্তা দিয়েছে পুলিশ।

কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠতেই নড়েচড়ে বসে সরকার। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পরেই ভর্তির সময়ে তোলাবাজির মুখে পড়তে হচ্ছে এমন পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে ই-মেল ও হোয়াটস অ্যাপ নম্বর দেয় কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ। একই পদক্ষেপ করে পূর্ব বর্ধমান পুলিশও। সেই পথে এগোল বীরভূম পুলিশও।

জেলার অধিকাংশ থানা ও সে সব এলাকার কলেজের সামনে ই-মেল এবং হোয়াটস অ্যাপ নম্বর লিখে প্রয়োজনে নির্ভয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাসও তাতে দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ মেলেনি। কলেজে কলেজে এ সংক্রান্ত বার্তা দিতে বলা হয়েছে বিভিন্ন থানার আধিকারিকদের।’’

জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষেরা জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা না বললেও, কলেজের গেটে ওই মর্মে পোস্টার, ফ্লেক লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে পুলিশ। কয়েকটি থানার তরফে কলেজ থেকে প্রতি দিনের ছাত্রভর্তির তথ্য সংগ্র্হ করা হচ্ছে। অধ্যক্ষদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশের এই উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইন থাকাই এখনও পর্যন্ত সব কিছু মসৃণ ভাবে চলার অন্যতম কারণ।’’

হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া কোনও পড়ুয়া অনার্স বা পাস কোর্সে ভর্তি হতে চাইলে তাঁর কলেজে আসার প্রয়োজন নেই। ভর্তি হওয়ার পরে এক বার কলেজে এসে নথি দেখিয়ে যেতে হবে। এতে ‘ভর্তি করে দেব’ বলে কেউ অন্যায় সুযোগ নিতে পারবে না। প্রায় একই বক্তব্য সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পরিচ্ছার। কলেজের গেটে পুলিশ ফ্লেকস টাঙিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে তপনবাবু বলেন, ‘‘ভর্তি হয়ে কলেজে এলে তাঁর কাছে টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই।’’ রামপুরহাট কলেজের কলেজের অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেধা তালিকা থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করার পরেই পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করা হবে। কেউ ভুল তথ্য দিয়ে থাকলে তাঁর আবেদন বাতিল হবে।’’

বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক রূদ্রদেব বর্মন বলেন, ‘‘ভর্তি নিয়ে জুলুমবাজি বা টাকা চাওয়ার অভিযোগ তো শাসক দলের ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধেই। বীরভূমে এখনও তেমন কোনও অভিযোগ প্রকাশ্যে আসেনি ঠিকই। তবে কয়েক জন পড়ুয়াকে টোপ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।’’ প্রশ্ন ছিল, কেউ অনলাইনে ভর্তি হলে তাঁর কাছে টাকা নেওয়া হবে কী করে? বামপন্থী ওই ছাত্রনেতার দাবি, মেধা তালিকা ধরে ভর্তি শেষ হওয়ার পরেও কিছু খালি আসন পড়ে থাকে। খেলা শুরু হয় খালি আসনে ভর্তি নিয়েই।’’ তবে জেলা টিএমসিপির সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলায় এমন কোনও আশঙ্কা নেই। তথ্য না জেনে কথা বলা ওঁদের অভ্যাস।’’

অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চললে এমন সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় এবং রামপুরহাট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়। দু’জনেই জানিয়েছেন— মেধা তালিকা ধরে ভর্তির পরও যদি দেখা যায় আসন খালি রয়েছে তা হলে প্রয়োজনে ফের তালিকা প্রকাশ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Education Extortion Admission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE