E-Paper

পলাতক মালিক, বন্ধ নলহাটির খাদান

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই এলাকায় প্রায় সব পাথর খাদান অবৈধ। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রক্তিম ঘোষ শুক্রবার রাতেই ভুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৮
বীরভূমে পাথর খাদানে ধস।

বীরভূমে পাথর খাদানে ধস। —নিজস্ব চিত্র।

ধসে প্রাণ গিয়েছে ছ’জন শ্রমিকের। তবে বীরভূমের নলহাটি ১ ব্লকের বাহাদুরপুর পাথর শিল্পাঞ্চলের যে অবৈধ খাদানে শুক্রবার সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার মালিক সঞ্জীব ওরফে ভুলু ঘোষ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর মতোই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন রশিদ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই এলাকায় প্রায় সব পাথর খাদান অবৈধ। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রক্তিম ঘোষ শুক্রবার রাতেই ভুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, খাদান মালিকের খোঁজ করছে পুলিশ। জেলাশাসক বিধান রায়ের দাবি, বাহাদুরপুর এলাকায় এর আগেও অবৈধ খাদান বন্ধ করা হয়েছে। শুক্রবারের দুর্ঘটনা মদনা মৌজায় ঘটেছে। সেখানেও অবৈধ খাদান মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাস্থলে শনিবার গিয়ে দেখা গেল, সব পাথর খাদান বন্ধ। শুধু পাথর ভাঙার যন্ত্র চালু রয়েছে। বাহাদুরপুর গ্রামের উত্তর প্রান্তে যে খাদানে ধস নেমেছে, সেখানে আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের জটলা। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে শ্রমিকদের জুতো।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এলাকায় ৩০-৪০টি অবৈধ খাদান রয়েছে। অধিকাংশই চালু। যেটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি ১০-১২ বারো বছর ধরে চলছে। জেলার পাথর খাদান মালিক সমিতির এক প্রাক্তন কর্তার দাবি, ‘‘রাজ্যে এখন কাগজেকলমে অবৈধ খাদানেও কাজ হয় পুরোদমে।’’

এলাকার একাধিক খাদান শ্রমিক জানান, সাধারণত খাদানগুলিতে বিকেল ৪টে বা ৫টা নাগাদ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর ফাটানো হয়। সে জন্য এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়। শুক্রবার দুপুরে ওই খাদানের মাঝামাঝি অংশে বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে ‘ড্রিল’ করছিলেন শ্রমিকেরা। সে সময় ধস নামে। মাথায় ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত সাহাবুদ্দিন শেখ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘ছ’জন মিলে ড্রিল করছিলাম। নীচে অন্যেরা বোল্ডার ভাঙছিল। আচমকা ধস নামে। পরে কী হয়েছে বলতে পারব না!’’

ঘটনায় গুরুতর আহত শ্রমিক তপন মাল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর জামাইবাবু ও বামপন্থী সংগঠন কৃষকসভার নেতা চন্দ্রকান্ত মাল বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পাথর খাদানে কাজ করেছি। আগে স্তরে স্তরে পাথর কাটা হত। বর্তমানে খাদানে নিয়ম মানা হয় না। শ্রমিকদের যদি মাথায় হেলমেট থাকত, তা হলে মৃতের সংখ্যা এত হত না।’’ কংগ্রেস নেতা মিল্টনের দাবি, ‘‘এনআইএ এই ঘটনার তদন্ত না করলে, কলকাতা হাই কোর্টে যাব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birbhum Abandoned Stone Quarry police investigation Deaths

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy