দুর্ঘটনার পরে। বান্দোয়ানের লতাপাড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
ঝড়-বৃষ্টিতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বছরখানেক আগে তৈরি, আবাস যোজনায় তৈরি বাড়ির দেওয়ালের একাংশ। ঘটনায় বরাত জোরে বেঁচেছেন এক শিশু-সহ দম্পতি। শুক্রবার রাতে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের লতাপাড়া গ্রামের ঘটনা। আহতদের বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা চলছে।
মহকুমাশাসক (মানবাজার) অনুজপ্রতাপ সিংহ বলেন, “ঘটনার খবর শুনেছি। দুর্যোগে বেশ কিছু ঘর ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা সরজমিনে বিষয়টি দেখছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সরকারি সাহায্য দেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরে আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা দলু সিংহ। শুক্রবার ঝড়-জলের রাতে বাড়ির এক ঘরে তিন বছরের ছেলে সঞ্জীব ও স্ত্রী সুষমাকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন দলু। অন্য ঘরে ছিল তাঁদের আর এক মেয়ে ও ছেলে। কিন্তু কী বিপর্যয় তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে, টের পাননি আগে।
স্থানীয়েরা জানান, আচমকা তাঁদের গায়ে ঘরের দেওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়ে। কোনও মতে ইট সরিয়ে পাশে থাকা একটি মন্দিরে আশ্রয় নেন তাঁরা। পরে, সকালে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বান্দোয়ান থানার পুলিশ। দম্পতি-সহ শিশুটিকে উদ্ধার করে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেপাঠানো হয়।
হাসপাতালে শুয়ে এ দিন দলু বলেন, ”গত বছরে ওই ঘর তৈরি করা হয়েছিল। ঘরের পাশে একটি মাটির ভাঙা দেওয়াল ছিল। বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল ভেঙে আমাদের ঘরের দেওয়ালে পড়ে এই ঘটনা। ইট সরিয়ে কোনও ভাবে টেনে তুলি স্ত্রী-ছেলেকে। ভয়ে আর পাশের ঘরে থাকতে পারিনি। মন্দিরেই বাকি রাতটা কাটাই। তিন জনের কম-বেশি চোট লেগেছে।“ সুষমারও চোখে-মুখে আতঙ্ক। বলেন, “তিন জনে ইটের নীচে চাপা পড়েছিলাম। ঘরের সব জিনিসপত্রও দেওয়াল চাপা পড়েছিল। বরাত জোরে বেঁচেছি।”,
তবে তৈরির এক বছরের মধ্যে কী ভাবে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্লকের আবাস যোজনা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সংযুক্ত আধিকারিক রূপনারায়ণ পাত্র বলেন, “প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়। মালপত্র কেনা থেকে বাড়ি তৈরির যাবতীয় দায়িত্ব উপভোক্তারই। কেন এমন হল, তা উপভোক্তাই বলতে পারবেন।” বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক নজরদারি হয় না? আধিকারিকের দাবি, “বাড়ি মাপঝোক মেনে হয়েছে কি না, সেটাই দেখা হয়। কী ধরনের মালপত্র, বা তা উপযুক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা দেখা হয় না।”
দলুর দাবি, “ঠিকমতো মালপত্র দিয়েই কাজ হয়েছিল। মাটির দেওয়ালটি ভেঙে পড়েই এই বিপত্তি।” কাজ শেষে, প্রকল্পের আধিকারিকেরা বাড়ি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy