বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহে। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
অক্টোবরের শুরুর দিকেই শান্তিনিকেতনে আসতে পারে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস (আইসিওএমওএস)-এর প্রতিনিধি দল। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই শান্তিনিকেতনের নাম উঠতে পারে ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকায়। সে কারণেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক ও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) উদ্যোগে সেজে উঠতে চলেছে বিশ্বভারতী।
বৃহস্পতিবার থেকেই পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের একটি দল শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন স্থানে সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। রবীন্দ্রভবনের পাঁচটি বাড়ি, ছাতিমতলা, ঘণ্টাতলা, উপাসনা মন্দির, শান্তিনিকেতন বাড়ি, সিংহসদন, দিনান্তিকা, শ্রীনিকেতন কুঠি বাড়ি, শ্রীনিকেতন ফ্রেস্কো-সহ রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সম্পর্কিত মোট ২৪টি স্থাপত্যের সংস্কার করবে ২৫ জনের এই দলটি। এই সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে বিশ্বভারতীর বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে।
২০১০ সাল থেকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের সম্ভাব্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল বিশ্বভারতী। তবে বিভিন্ন কারণে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন হয়নি বিশ্বভারতীতে। তারই মাঝে বেশ কিছু নতুন ইমারত তৈরি হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকের সংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুণ। এই সমস্ত পরিবর্তিত তথ্য নতুন করে জমা দিয়ে আবারও তালিকায় নাম তোলার আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্রের খবর, এই সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতেই পরিদর্শনে আসবে আইসিওএমওএস-এর প্রতিনিধিদল। তারা সেই পরিদর্শনের রিপোর্ট জমা দেবে ইউনেস্কোকে। রিপোর্টে খুশি হলে পরবর্তী ধাপের পরিদর্শনে এক বছর পর আবার একটি প্রতিনিধিদল আসবে। সেখানেও সব সন্তোষজনক হলে আরও এক বছর পরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে বিশ্বভারতী বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে, জিওগ্রাফিকাল হেরিটেজ নয়, কালচারাল হেরিটেজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে শান্তিনিকেতন। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক বলেন, “বিশ্বভারতীর কোনও স্থাপত্য পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন বা এসএসআইয়ের তালিকায় নেই। তাই শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য বা ভাস্কর্য এখানকার সংস্কৃতিকে বোঝাতে গুরুত্বপূর্ণ, তবে শান্তিনিকেতন তার ধারণা ও আদর্শের ভিত্তিতেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।’’
প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে শেষ বার বড় সংস্কারের কাজ হয়েছে শান্তিনিকেতনে। ২০০৯-এর শেষে উপাসনা মন্দির-সহ বেশ কিছু স্থাপত্য সংস্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে শ্যামলী বাড়ি আরও একবার সংস্কার করা হলেও সার্বিক ভাবে আবার বৃহৎ সংস্কার শুরু হল এ বার। এখন ইউনেস্কো কী সিদ্ধান্ত নেবে সেই দিকেই তাকিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy