চলন্ত ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় এক মহিলা চিকিৎসক-অধ্যাপকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করা হল এক ব্যক্তিকে। অভিযুক্ত পুরুলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। মঙ্গলবার ওই অধ্যাপককে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আদালত এবং রেলপুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৭ মে বাঁকুড়া স্টেশনে জিআরপি থানায় হাজির হন পুরুলিয়ার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসক-অধ্যাপক। তিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে ‘নিগৃহীতা’ জানান, ২৬ মে রাতে পুরুলিয়া যাওয়ার জন্য তিনি হাওড়া স্টেশন থেকে চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেনের এসি কামরায় ওঠেন। পরের দিন ভোরে বিষ্ণুপুর স্টেশনে ট্রেন পৌঁছোনোর আগে ঘুম থেকে উঠে পড়েন তিনি। কারণ, তাঁর এক সহযাত্রী তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।
ওই অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে বাঁকুড়া স্টেশনের রেলপুলিশ। কয়েক দিন ধরে অভিযুক্তর খোঁজ চালানো হলেও তাঁর নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার রেলপুলিশের কাছে বিশেষ সূত্রে খবর আসে, অভিযুক্ত পেশায় অধ্যাপক। তিনি হাওড়ায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। তড়িঘড়ি বাঁকুড়া স্টেশনের রেলপুলিশ হাওড়ায় পৌঁছে যায়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া নিয়ে যায় তারা। মঙ্গলবার ধৃতকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করে রেলপুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ৭৪, ৬৪ এবং ৬২ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে রেলপুলিশ।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী রথীন দে বলেন, ‘‘ঘটনার দিন পুরুলিয়ার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসক-অধ্যাপক এবং পুরুলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একই ট্রেনে একই কামরায় সফর করছিলেন। ওই অধ্যাপক চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। রেলপুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেছে। আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানায় অভিযুক্ত পক্ষ। কিন্তু বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ অন্য দিকে, অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযোগকারী প্রথমে রেলপুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে তিনি বয়ান বদলে ধর্ষণের অভিযোগ যুক্ত করেন। একজন চিকিৎসকের এই বয়ান বদল আমাদের কাছে বোধগম্য হচ্ছে না। আমার ধারণা, এই ঘটনার পিছনে থাকা কোনও সত্য আদালতের সামনে আসছে না। যা-ই হোক, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আমার মক্কেল আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্ত তার মাঝেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। আমার মক্কেল সব রকম ভাবে পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করছেন।’’