বিষ্ণুপুর খাদ্য ভবনের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
ডিজিটাল রেশন কার্ড বানাতে সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ল খাদ্য দফতরের ভবনে। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেলেন কর্মীরা। গ্রাহকদের লাইন রাস্তা অবধি ছড়িয়ে পড়ায় যানজটে নাকাল হলেন অনেকেই।
সোমবার সকাল থেকে এমনই দৃশ্য দেখা গেল বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লাইফ সার্কেল ম্যানেজমেন্ট অফ রেশন কার্ড’— এই প্রকল্পে নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ফর্ম জমা নেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে দিতে হচ্ছে নানা রকম নথিপত্র। মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দেবজ্যোতি তালুকদার বলেন, ‘‘প্রায় ৫০ হাজারের উপর গ্রাহক আমাদের দফতর থেকে ডিজিটাল রেশন কার্ড নেবেন। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। আপাতত কোনও শেষ দিন নেই।’’ তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার থেকেই রেশন গ্রাহকদের ফর্ম জমা দেওয়ার চাপ বাড়ছিল। সেই মতো তাঁরা বিষ্ণুপুর থানাকে জানিয়ে রেখেছিলেন। এরই মধ্যে বিষ্ণুপুর ব্লকের ৯টি অঞ্চল ও পুরসভায় বিভ্রান্তি ছড়ায়, এ দিনই নাকি ফর্ম জমা নেওয়ার শেষ দিন। দেবজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘মোটেই তা নয়। প্রক্রিয়াটি এখন চলবে। এ দিন আমরা তিনটি কাউন্টার খুলে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’’
এ দিন সকাল থেকে লম্বা লাইন পড়ে যায় দফতরের সামনে। একসময় গ্রাহকদের সেই লাইন রাস্তাতেও চলে আসে। শুরু হয়ে যায় যানজট। স্কুলের সময় বিপাকে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। কাছেই জেলা হাসপাতাল থাকায় রোগী নিয়ে নাজেহাল হন অ্যাম্বুলেন্স চালকেরাও। ভোর থেকে লাইনে ছিলেন দমদমা গ্রামের ধীরেন রায়, কুসুমবনি গ্রামের শাকিলা বিবি, বামুনবাঁধ গ্রামের আলি বক্কর চৌধুরী, ভিমারডাঙা গ্রামের মঙ্গল সোরেনরা। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘কাকভোর থেকে দাঁড়িয়ে আছি। অফিসবাবুদের হাত আর চলছে না।’’ বিষ্ণুপুরের ঢেলা দুয়ারের বাসিন্দা শরদিন্দু কর ফুঁসে উঠে বললেন, ‘‘প্রশাসনের একটা পদ্ধতি থাকা উচিত। গা জোয়ারি করে এক জন তো আমাকে লাইন থেকেই সরিয়ে দিল। এ দিকে অফিসের দেওয়ালে বিজ্ঞপ্তি সাঁটা, দুপুর আড়াইটের পরে ওঁরা ফর্ম জমা নেবেন না। কী যে হবে, কে জানে!’’
শুধু শরদিন্দুবাবুই নন, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অধিকাংশ মানুষেরই নতুন ডিজিটাল কার্ড হাতে না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ। বিষ্ণুপুর মহকুমা খাদ্য দফতরের চিফ ইনন্সপেক্টর মণিলাল হেমব্রম জানালেন, তাঁর পরিবারের কারওর-ই এখনও ডিজিটাল কার্ড আসেনি। দফতরের প্রধান করণিক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘এত দিন আমরা সত্যিই দুপুরের পরে ফর্ম নিচ্ছিলাম না। কারণ, পরবর্তী কাজগুলো করতে আমাদের সময় লাগছে। এ বারই আমরা প্রথম গ্রাহকদের ফর্ম, ডকেট নম্বার সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিচ্ছি। আমাদের কর্মী সংখ্যা কম। তার মধ্যেই ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ এ দিন বিকেল ৪টের পরেও রেশন গ্রাহকদের কাছ থেকে ফর্ম জমা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy