Advertisement
E-Paper

বাড়ির দুর্গারা পুজোর র‌্যাম্পেও

সপ্তমীর সকালে দুর্গা সাজে র‌্যাম্পে হাঁটতে নিজেদের জন্য এমনই সাজ ঠিক করেছেন ওঁরা। ওঁরা বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকদের ঘরণী। দুর্গা রাউন্ডের পর থাকছে বেনারসী রাউন্ড।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৪
প্রস্তুতি: সপ্তমীর সকালে এমনই সাজে দেখা যাবে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকদের ঘরণীদের। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তুতি: সপ্তমীর সকালে এমনই সাজে দেখা যাবে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকদের ঘরণীদের। নিজস্ব চিত্র

হাতে ত্রিশূল, তরোয়াল। পরনে লাল পাড় সাদা খোলের শাড়ি। সঙ্গে এথনিক অলঙ্কারও।

সপ্তমীর সকালে দুর্গা সাজে র‌্যাম্পে হাঁটতে নিজেদের জন্য এমনই সাজ ঠিক করেছেন ওঁরা। ওঁরা বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকদের ঘরণী। দুর্গা রাউন্ডের পর থাকছে বেনারসী রাউন্ড। সেই সময় ‘বাড়ির দুর্গাদের’ সঙ্গে থাকবে তাঁদের সন্তানরাও।

দুর্গাপুজোয় র‌্যাম্পে হাঁটা! জেলার বুকে অভিনব ব্যাপার। এক ঘরণী তথা সঞ্চালক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘মায়ের দশ হাত। এক সঙ্গে এতগুলো হাতে সব সামলান। বাড়ির দুর্গাদের দশ হাত নেই। কিন্তু তাঁরাও তো সব দিক সামলান। তাই বাড়ির দুর্গাদের সম্মান জানাতেই এই র‌্যাম্প শো।’’ বক্রেশ্বর অফিসার্স ক্লাবের পুজো এ বার ছ’বছরে পড়ল। আয়ত চোখ, শৈল্পিক সাজে সপরিবার দুর্গা বেদীতে আসীন। মণ্ডপে রয়েছে পটশিল্পের ছোঁয়া। আবাসনের পুজোয় যে উচ্ছ্বাস চোখে পড়ে, এখানেও তেমনটাই। পঞ্চমীর সকালে মণ্ডপের অনবদ্য পরিবেশে উপস্থিত বাড়ির ‘দুর্গাদের’ সঙ্গে আলোচনায় উঠে এল র‌্যাম্পের প্রসঙ্গ।

র‌্যাম্প-শোতেই আকর্ষণ শেষ হচ্ছে না। রয়েছে ‘জাগো দুর্গা’ নামে একটি শ্রুতিনাটক। বাচ্চাদের নানা অনুষ্ঠান। গুজরাতের বিখ্যাত গর্বা, ডান্ডিয়া নাচ থেকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, দশমীর সকালে সমবেত সিঁদুর খেলা সবই। অর্পিতা ঘোষ, অনিন্দিতা কর্মকার, অগ্নিহত্রি কুণ্ডু, পিয়ালি দাস চন্দ, উর্মিমালা মজুমদাররা বলছেন, ‘‘প্রাচীনত্বের সঙ্গে আধুনিকতা, প্রাদেশিকাতার বিভেদটা মুছে পুজোর আনন্দকে পুরোপুরি উপভোগ করতে যা কিছু প্রয়োজন, সবই হাজির। কারণ, পুজোটা একান্তই আমাদের।’’ এই ক’টা দিন সকলে একটা বৃহত্তর পরিবার।

উদ্যোক্তারা জানান, আগে এই উৎসব তেমন অনুভূত হত না বলেই অফিসার্স ক্লাবে দুর্গাপুজোর আয়োজন। এমনটাই জানাচ্ছেন, পুজো কমিটার সম্পাদক সত্যজিৎ ঘোষ, অনুপম দেবনাথ, প্রাক্তন সম্পাদক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়রা। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগে কালীপুজো হলেও দুর্গাপুজো ছিল না। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে একটি সর্বজনীন দুর্গাপুজো থাকলেও, সেই পুজো তেমন ভাবে নিজেদের ছিল না। পুজোয় মাত্র দু’দিনের ছুটি মেলে। বাড়ি যেতে আসতেই সেটা খরচ হয় যেত। দুর্গাপুজো শেষ হয়ে যেত। মন হত পরিবারের সকলেরই। তাই ২০১১ সালে কালীপুজোর পরই ঠিক হয় অফিসার্স ক্লাবই দুর্গাপুজো করবে।

২০১২ থেকে শুরু হয় পুজো। আধিকারিকরা বলছেন, ‘‘প্রথম দু’এক বছর ততটা না জমলেও ২০১৪ সাল থেকে পুজো উপভোগ্য হয়।’’ দু’বছর হল নতুন অফিসার্স ক্লাব বিল্ডিং গড়ে পুজো সেখানে করার পর সেই মাত্রা আরও বেড়েছে। আবাসনে প্রায় ৩০০ পরিবার মাসে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জামান পুজোর খরচের জন্য। ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকে ন’বেলা অর্থাত দশমী পর্যন্ত হেঁসেল বন্ধ। রয়েছে নানা সুস্বাদু পদ। ষষ্ঠীর সন্ধ্যা ও অষ্টমীর দিন নিরামিষ। সব দায়িত্ব ক্লাবের।

প্রতিমা, মণ্ডপ হয়েই গিয়েছে। পঞ্চমীর সকালে বাকি আয়োজনও প্রায় চূড়ান্ত। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র, লাইট লাগানো, শোয়ের র‌্যাম্প তৈরি সবই।

মায়েদের সঙ্গে মণ্ডপে আনন্দে মেতেছে খুদেরাও। মায়েদের উপস্থিতির অবশ্য কারণ রয়েছে। টানা তিন মাসের অনুশীলনের পরে, এ দিন সকালে গর্ভা, ডান্ডিয়া নাচের ড্রেস রিহার্সাল ছিল তাঁদের। সকলের পড়নে নানা রঙের লেহেঙ্গা, চোলি, কাজ করা দো-পাট্টা। হাতে দুটি ডান্ডিয়া স্টিক। গুজরাতের ডান্ডিয়া, গর্বা এখানে কেন?

অর্পিতা ঘোষ বলছেন, ‘‘এই নাচে অনেকে একসঙ্গে পারফর্ম করতে পারে। তা ছাড়া আমরা মেয়েরা সাজতে ভালবাসি। বাঙালির সেরা উৎসবে সেটা কাজে লাগাতে চাই।’’ শুরু হয়ে গিয়েছে তার কাউন্ট ডাউন।

Bakreshwar Thermal plant Durga Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy