Advertisement
E-Paper

জল জমে থাকলেই ১০০০ টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা!

এ বার ডেঙ্গির মশা নিয়ন্ত্রণে জরিমানার দাওয়াই চালু করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০১:০৫
সচেতনতায় পুরুলিয়ায় পড়ুয়ারা। বাঁকুড়াতেও মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

সচেতনতায় পুরুলিয়ায় পড়ুয়ারা। বাঁকুড়াতেও মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইঙ্গিতটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক। এ বার ডেঙ্গির মশা নিয়ন্ত্রণে জরিমানার দাওয়াই চালু করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে নির্মীয়মাণ বাড়িতে জল জমে থাকলে প্রশাসন জরিমানা করবে। মঙ্গলবার জেলাশাসক এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর ও ঝালদা পুরসভায় নির্মীয়মাণ বাড়ি-সহ যে কোনও জায়গায় জমা জল দেখতে পেলেই এক হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।’’ জরিমানার অঙ্ক কী হবে ঠিক হবে? জেলাশাসক জানান, মহকুমাশাসক বা ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের কোনও আধিকারিক খতিয়ে দেখে জরিমানার অঙ্ক ঠিক করবেন।

সোমবার পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, পুরুলিয়া শহরে মোট ৪৪ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। কিন্তু, মঙ্গলবার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যাটা আরও বেশি। এখনও পর্যন্ত তাঁরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন, চলতি মরসুমে পুরুলিয়া শহরে ৬৮ জনের ডেঙ্গি হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই দেশবন্ধু রোড এলাকার বাসিন্দা। তবে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

কী ভাবে রাতারাতি ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেল? স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় জ্বরে অসুস্থ হয়ে অনেকেই আশপাশের জেলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ডেও চিকিৎসা করাতে চলে গিয়েছিলেন। তাঁদের সেখানেই ডেঙ্গি ধরা পড়ে। কিন্তু, সেই খবর স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ছিল না। পরবর্তীকালে এলাকায় নিবিড় ভাবে সমীক্ষা করে তেমনই কিছু ডেঙ্গি-আক্রান্তের সন্ধান মেলে। এর মধ্যে পুরুলিয়া ২ ও পুরুলিয়া ১ ব্লকের কয়েকজন রয়েছেন। তাঁদের কোনও ভাবে দেশবন্ধু রোড এলাকার যাতায়াত রয়েছে।

এরই মাঝে পাড়ায় দু’জন ও পুঞ্চা ব্লক এলাকায় এক জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর মিলেছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘পাড়া ও পুঞ্চায় ডেঙ্গি হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আক্রান্তেরা কোথা থেকে এসেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও মাঝেমধ্যে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিললেও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা শহরবাসীর সচেতনতায় হতাশ। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে জল জমানোর বিষয়ে এত প্রচার চালানো হচ্ছে, তবুও একাংশের হুঁশ ফিরছে না। পুরসভার তরফে ডেঙ্গির বিষয়ে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘এটা ঠিক কথাই, কোনও কোনও এলাকায় গিয়ে আমাদের কর্মীরা কিছু কিছু বাড়িতে নানা কারণে ঢুকতে পারছেন না। সেই বাড়িগুলিতে জল জমে রয়েছে কি না বোঝাও যাচ্ছে না। এই বাড়িগুলির বিষয়ে কী করা যায়, পুরপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে পুরুলিয়া জিলা স্কুলের পড়ুয়ারা মঙ্গলবার পথে নামল। স্কুলের টিচার-ইনচার্জ তারাপদ গোস্বামী ও স্কুলের শিক্ষক নুরউদ্দিন হালদার বলেন, ‘‘শহরের একটি এলাকায় আপাতত ডেঙ্গি সীমাবদ্ধ থাকলেও, তা যে শহরের অন্যত্র ছড়াবে না, সে নিশ্চয়তা নেই। তা ছাড়া শহরের অনেকের মধ্যে এখনও দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই পড়ুয়ারা পথে নেমেছিল। একই সঙ্গে তাদের মধ্যেও ডেঙ্গি রুখতে কী কী করা উচিত, এই শিক্ষাও তৈরি করা হল।

Dengue Fine ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy