ভোট ‘শান্তিপূর্ণ’ বলে দাবি করলেও গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পুরুলিয়া জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। নির্বাচন কমিশনও দলগুলির প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার প্রকাশ করেনি। তাই কত শতাংশ মানুষের ভোট সিপিএমের ভাগে এসেছে, তা জানতে দলের প্রতিটি এরিয়া কমিটির কাছ থেকে ফল-সহ রিপোর্ট চাইলেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। শনিবার দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘সাঁতুড়িতে গণনা কেন্দ্রের বাইরে আমাদের প্রতীকে ছাপ মারা প্রচুর ব্যালট পেপার মিলেছে। ভোটের দিন কোথাও বুথের সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ এসেছে। অনেক জায়গাতেই গণনার সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয় যে আমাদের এজেন্টদের অনুপস্থিতিতে ভোট গোনা হয়েছে। তাই এ দিনের বৈঠকে প্রতিটি এরিয়া কমিটির কাছ থেকে ফল-সহ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই আমরা তা পর্যালোচনা করব।’’
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম জেলার ২৪৭৪ পঞ্চায়েতের মধ্যে একাই প্রার্থী দেয় ১৬০৫ আসনে। সমস্ত আসনে প্রার্থী দিতে না পারলেও সিপিএম-সহ বাম শরিকেরা সিংহ ভাগ আসনেই প্রার্থী দেয়। অথচ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু আসনে প্রার্থীই দিতে পারেননি বামেরা। এ বারে সিপিএম জেলার ৪৯৬ পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে ৪০১টি আসনে এবং জেলা পরিষদের ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনে প্রার্থী দেয়। এ বার মানবাজার, জামবাদ ও মাঠারি-খামার পঞ্চায়েত সিপিএম দখল করেছে। আসন সমঝোতার ভিত্তিতে বান্দোয়ানের কুমড়া পঞ্চায়েতেও কংগ্রেস-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে ক্ষমতা দখল করেছে সিপিএম। মানবাজার ১ ব্লকের ধানাড়া পঞ্চায়েতেও ১০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৫, তৃণমূল ৩ ও বিজেপি ২টি আসন পায়।
জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত ভোট ও বিধানসভা ভোটে জেলায় তারা ৭-৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এ বার সিপিএম ১৫.২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপের দাবি, ‘‘জেলার ফল এখনও হিসেব করা না গেলেও রাজ্যের নিরিখে বলতে পারি কমবেশি ২১ শতাংশ ভোট পেয়েছি আমরা। দলে অনেক নতুন মুখ এসেছেন। তাঁদের নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)