Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
জেলার ২৫টি থানার বেশ কয়েকটিতেই চাইল্ড ফ্রেন্ডলি কর্নার নেই বা থাকলেও সেগুলি নির্দিষ্ট মানের নয়।

শিশুবান্ধব কর্নার কি সব থানায় আছে, প্রশ্ন

কাগজে কলমে সেই নির্দেশ মেনে চলার কথা বীরভূম জেলার সব ক’টি থানার-ই।

বিক্ষোভ: পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

বিক্ষোভ: পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৫৫
Share: Save:

সুন্দর করে রং করা একটি পৃথক ঘর। দেওয়ালে সাঁটানো ছোটদের মনের মতো নানা পোস্টার, খেলার সরঞ্জাম, বাহারি চেয়ার-টেবিল। সিসি ক্যামেরার নজরদারি। পৃথক শৌচাগার।

থানা বা জেলের ধারণা যাতে শিশুমনে না পৌঁছয়, সেই ভাবনা থেকেই ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস বা এনসিপিসিআর ২০১৭ সালে জুনে একটি নির্দেশিকা দেয়। সেখানে বলা আছে, উদ্ধার হওয়া বা ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত কোনও শিশু বা নাবালককে প্রয়োজনে থানায় রাখতে হলে দাগি অপরাধীদের সঙ্গে নয়, রাখতে হবে চাইল্ড ফ্রেন্ডলি বা শিশুবান্ধব কর্নারে।

কাগজে কলমে সেই নির্দেশ মেনে চলার কথা বীরভূম জেলার সব ক’টি থানার-ই। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে মল্লারপুর থানায় পুলিশ হেফাজতে এক নাবালকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে প্রশ্ন উঠেছে, মল্লারপুর থানায় কি সেই ব্যবস্থা ছিল? থাকলে কী কারণে মৃত্যু, সেটা জানতে বেগ পাওয়ার কথা নয়। অথচ ওই নাবালকের দেহ কী অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে পুলিশ কিছু জানাতে চায়নি। চাইল্ড লাইন ও জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, জেলার ২৫টি থানার বেশ কয়েকটিতেই চাইল্ড ফ্রেন্ডলি কর্নার নেই বা থাকলেও সেগুলি নির্দিষ্ট মানের নয়। সেই তালিকায় রয়েছে মল্লারপুর থানাও।

বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘যে ক’টি নতুন থানা হয়েছে সেগুলিতে তো বটেই, প্রায় সব থানায় চাইল্ড ফ্রেন্ডলি কর্নার রয়েছে। তবে মল্লারপুর থানা পূর্ত দফতরের জায়গায়। থানার নিজস্ব জায়গার খোঁজ চলছে। ফলে, যে ভাবে শিশুবান্ধব কর্নার থাকার কথা, তা ওখানে ছিল না।’’

চুরির অভিযোগে আটক ওই নাবালকের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য শিশু কমিশনের চেয়ার পার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় ওই থানা পরিদর্শনে শনিবার ওই থানায় যাওয়ার কথা জেলা শিশু কল্যাণ আধিকারিক নিরুপম সিংহের। তিনি বলছেন, ‘‘কাগজে কলমে প্রতি থানায় শিশুবান্ধব কর্নার থাকার কথা। থানার সেকেন্ড অফিসার পদাধিকার বলে শিশু বান্ধব পুলিশ অফিসার হিসেবে থাকেন। সিসি ক্যামেরায় কী ধরা পড়েছে, তা এবং সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হবে মল্লারপুরের ঘটনায়।’’

আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, কোনও শিশু হারিয়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে আসা হয়। অভিভাবকের খোঁজ পাওয়া না গেলে তাকে হোমে পাঠানো হয়। অন্য দিকে, কোনও অভিযোগে নাবালক বা নাবালিকাকে গ্রেফতার করা হল‌ে, তাকে প্রথমে থানায় এনে রাখা হয়। দুপুর বা বিকেলে গ্রেফতার করা হলে পরের দিন জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। ফলে, এক রাত থানাতেই কাটাতে হয় তাদের। মনোবিদদের কথায়, থানায় যদি শিশুবান্ধব কর্নার না থাকে, তা হলে থানার সাধারণ পরিবেশ ছোটদের মনে প্রভাব ফেলে। যা শিশু অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police station Child Friendly Corner Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE