Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মানসিক রোগীকে নিয়ে জেরবার হাসপাতাল

আগের বার ওই মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর দৌরাত্ম্যে নাজেহাল রোগীরা ওয়ার্ডে তাঁকে ঠাঁই দিতে না চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অসহায়: রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

অসহায়: রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ১১:৪০
Share: Save:

কয়েক দিন আগে হাসপাতাল থেকে হঠাৎই উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ফের তাঁকে খুঁজে পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু আগের বার ওই মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর দৌরাত্ম্যে নাজেহাল রোগীরা ওয়ার্ডে তাঁকে ঠাঁই দিতে না চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বছর চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশের ওই ভবঘুরে মানসিক প্রতিবন্ধীকে দিন পঁচিশেক আগে রাস্তার পাশে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ তুলে এনে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। হাসপাতালের বেডে রেখে চিকিৎসা শুরু করেছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু একটু সুস্থ হওয়ার পরেই উপদ্রব জুড়েছিলেন তিনি। ভর্তি থাকা রোগীদের অভিযোগ, ওই রোগী অন্যান্যদের খাবার, জল ছিনিয়ে খেয়ে নিতেন। বিছানার চাদর টেনে ফেলে দিতেন। ফলে সেই সময়েই এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল রোগীরা। তবে রোগীদের স্বস্তি দিয়ে মাঝে হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান ওই ব্যক্তি।

সম্প্রতি আবার তিনি ফিরেছেন। তবে নিজে থেকে নয়। কলেজের কয়েকজন ছাত্রের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুরসভার সাফাইকর্মীরা দিন চারেক আগে তাঁকে ভর্তি করান হাসপাতালে। কিন্তু এ বার অন্য সমস্যা। পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা মাথায় থাকায় রোগীরা সম্মিলিত ভাবে ওই মানসিক প্রতিবন্ধীকে ওয়ার্ডে রাখা যাবে না বলে তীব্র আপত্তি তোলেন। বেকায়দায় পড়ে শেষে ওয়ার্ডের বাইরে ফাঁকা জায়গায় রেখে তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু মানসিক সমস্যা থাকায় তিনি জায়গা বদলে আবার চলে এসেছেন হাসপাতালের একতলায় ওঠার সিঁড়ির মুখে। সেখানেই গামছা বিছিয়ে শুয়ে থাকছেন। আগে তাঁর হাতের ঘায়ের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু নিরাময়ের আগেই তিনি পালিয়ে যাওয়ায় সেই ঘা এখন গ্যাংগ্রিনে পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধে তাঁর পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা সমস্যায় পড়ছেন। অন্য দিকে, নার্স ও চিকিৎসকেরা তাঁকে ধরে বেঁধে ওষুধ খাওয়াতে ও মলম লাগাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

হাসপাতাল সুপার সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘মানসিক রোগের চিকিৎসা এখানে হয় না। তাই ওই রোগীকে নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। ঠিক মতো চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলছেন অন্যান্য রোগীরা।” সঙ্কট মোচনে তাঁরা বিষয়টি মহকুমাশাসককের দ্বারস্থ হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE