সচেতনতার প্রচারই সার। রেলগেট বন্ধ থাকলেও পারাপার চলছেই। জয়চণ্ডী রেলগেটে তোলা নিজস্ব চিত্র।
তিন ‘ই’, এই পদ্ধতি মেনেই ডিভিশনে প্রহরীবিহীন রেলফটক-সহ অন্যান্য রেলগেটে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে আদ্রার রেলকর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ধাপে ধাপে প্রহরীবিহীন রেলফটকগুলো পুরোপুরি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আদ্রার ডিআরএম অনশূল গুপ্তের দাবি, আগামী দু’বছরের মধ্যে ডিভিশনের সমস্ত প্রহরীবিহীন রেলফটক বন্ধ করে দেওয়া হবে। লেবেল ক্রসিং সচেতনতা সপ্তাহের মধ্যে এই তথ্য দিয়েছেন আদ্রার রেলকর্তৃপক্ষ।
গত ৬ জুন থেকে পালিত হয় লেবেল ক্রসিং সচেতনতা সপ্তাহ। প্রহরীবিহীন রেলফটক ও রেলগেটগুলোয় দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে রেলকর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আদ্রার ডিআরএম জানান, মূলত তিন ‘ই’ পদ্ধতি অবলম্বন করে রেলফটকে দুর্ঘটনা কমানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।
কী এই তিন ‘ই’? ডিআরএম জানাচ্ছেন, এডুকেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং ও এনফোর্সমেন্ট। এই তিন ‘ই’-এর মাধ্যমে লেবেল ক্রসিং সচেতনতা সপ্তাহে কাজ হচ্ছে। এডুকেশন অর্থাৎ কী ভাবে প্রহরীবিহীন রেলফটক পার হবেন, লোকজন ও গাড়ির চালকদের তা শেখানো হয়। রেলের কর্মী ও আধিকারিকেরা প্রহরীবিহীন রেলফটকে গিয়ে লোকজন ও গাড়ির চালকদের বোঝান— রেললাইন পার হওয়ার আগে দাঁড়িয়ে ট্রেন আসছে কি না দু’দিকে ভালো করে দেখে তবেই লাইন পার হতে হবে। পাশাপাশি সচেতনতা প্রসারে রেলফটকগুলোর সামনে ‘কী করবেন ও কী করবেন না’ এ নিয়ে ফ্লেক্স লাগিয়েছে রেল। রেলকর্মীরা হ্যান্ডবিল বিলি করেন লোকজনের মধ্যে। বিভিন্ন স্টেশন ও রেলগেটের সামনে সচেতনতা প্রসারে পথনাটিকাও করেন রেলকর্মীরাও।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রহরীবিহীন রেলফটক ও অন্যান্য রেলগেটে দুর্ঘটনা ঘটলে, সে ক্ষেত্রে ট্রেনচালক বা রেলকর্মীদের ভুলত্রুটি থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এনফোর্সমেন্ট এই বিষয়টি দেখবে। পাশাপাশি বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় বন্ধ থাকা রেলগেটের তলা দিয়ে সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে যাচ্ছেন লোকজন। ডিআরএম জানান, রেলের আইন অনুযায়ী বন্ধ থাকা রেলগেটের নীচ দিয়ে যাতায়াত করা আইনবিরুদ্ধ। সে ক্ষেত্রে রেলের কর্মী ও আরপিএফের কর্মীরা রেলগেটে দিয়ে এ ভাবে যাতায়াত করা লোকজনদের ধরে জরিমানা করছেন।
তবে এডুকেশন ও এনফোর্সমেন্টের মাধ্যমে যে প্রহরীবিহীন রেলগেটে দুর্ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়, তা ভালই বোঝে রেল। তাই এ ক্ষেত্রে রেল বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। আদ্রা ডিভিশনে মোট রেলগেটের সংখ্যা ৩৬৬টি। তার মধ্যে ১৭৪টি প্রহরীবিহীন রেলফটক। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রেলফটকগুলোর মধ্যে কয়েকটিতে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরি করা, কিছু রেলফটকে প্রহরী নিয়োগ করা হবে। ডিআরএম বলেন, ‘‘যে প্রহরীবিহীন রেলফটকে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরি করা সম্ভব সেখানে ওই কাজ শুরু হয়েছে। গত বছর ডিভিশনে ২২টি সাবওয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই বছরে এখনও চারটি তৈরি হয়েছে। এই সাবওয়ে দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ ছোট গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে।” ডিআরএমের দাবি, স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরি করে, ডাইভার্সন করে এখনও পর্যন্ত ডিভিশনে ৬৬টি প্রহরিবিহীন রেলফটক বন্ধ করা হয়েছে। আগামী দু’বছরের মধ্যে সমস্ত রেলফটক বন্ধ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy