বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন একাধিক বার ‘সিপিএমের’ পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গাড়ি ছেড়ে বাইকে করে অকুস্থলে পৌঁছতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম কাণ্ডের সময়েও কোলাঘাটে বাধা পেয়ে তিনি এ ভাবেই বাইকে চড়ে নন্দীগ্রাম পৌঁছেছিলেন। সে দিনের বিরোধী নেত্রী আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধী আসনে বামেরা। ক্ষমতার হাত বদল হলেও, বদলায়নি পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার সেই কৌশল।
বাইকে চেপে বগটুই গ্রামের পথে সেলিম। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সাতসকালে বগটুই গ্রামে ঢুকে পড়লেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সঙ্গে প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘‘এখানে তদন্ত হবে। সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) আসবে। কেউ যেন প্রমাণ নষ্ট না করতে পারে। প্রমাণ নষ্ট করতে পারবে শুধু সিট। সেই কারণেই সিট গঠন করা হয়েছে।’’
মঙ্গলবার রাতেই বোলপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেলিম, বিমান বসুরা। কথা ছিল, সকাল ১০টা নাগাদ তাঁরা বগটুইতে ঢোকার চেষ্টা করবেন। পুলিশও তৈরি ছিল। কিন্তু সেলিম সাতসকালেই বেরিয়ে পড়েন। বাইকে চেপে পুলিশের নজর এড়িয়ে সাধারণ মানুষের মতো বগটুই গ্রামে ঢুকে পড়েন। গ্রামে ঢুকে বাইক থেকে নেমে সোজা হাঁটা দেন সঞ্জু শেখের বাড়ির দিকে। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সেলিম বলেন, ‘‘অপরাধীরা যখন এই বাড়িগুলিতে খুন করছিল, তখন পুলিশ বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল।’’
বগটুই গ্রামে নববধূ মর্জিনা বিবিকে আনতে গিয়েছিলেন কাজি সাজিদুল রহমান। স্ত্রীকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ সাজিদুল। তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সেলিমের অভিযোগ, সাজিদুলের বাবা কাজি নুরুল রামপুরহাট এবং নানুর পুলিশ স্টেশনে গেলেও তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। সরকারের তরফ থেকে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা জানানো হচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও সঠিক তদন্তের আগেই মৃত্যুর পিছনে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে শট সার্কিটের তত্ত্ব খাড়া করার নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর সংযোজন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাওয়াই চপ্পলে রক্তের দাগ আছে।’’
এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল ও কেন্দ্রের বিজেপি-কে একসূত্রে গেঁথে আক্রমণ শানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। সিআইডি বা সিবিআই— যেই তদন্ত করুক, কোনও লাভ হবে না বলে মন্তব্য সেলিমের। বলেন, ‘‘মমতার সিআইডি আর অমিত শাহের সিবিআই মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। কাক, কাকের মাংস খায় না। মমতা আর অমিত শাহ ঠিক করে দেন কী হবে।’’
তবে গ্রামে ঢোকার সময় তিনি কোনও বাধার মুখে পড়েননি বলে জানান সেলিম।
প্রসঙ্গত, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন একাধিক বার ‘সিপিএমের’ পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গাড়ি ছেড়ে বাইকে করে অকুস্থলে পৌঁছতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম কাণ্ডের সময়েও কোলাঘাটে বাধা পেয়ে তিনি এ ভাবেই বাইকে চড়ে নন্দীগ্রাম পৌঁছেছিলেন। সে দিনের বিরোধী নেত্রী আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর বিরোধী আসনে বামেরা। ক্ষমতার হাত বদল হলেও, বদলায়নি পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার সেই কৌশল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy