Advertisement
০১ মে ২০২৪
আদালতে জবানবন্দি দেবেন নির্যাতিত তরুণী

বড়জোড়ায় গ্রেফতার পিসেমশাই

কাজ চেয়েছিলেন। উল্টে কাজ দেওয়ার নাম করে পিসেমশাই তাঁকে ধর্ষণ করে, দেহ ব্যবসায় নামায়। শনিবার বিকেলে তরুণী এই অভিযোগ করার পরে রবিবার সন্ধ্যায় সেই পিসেমশাইকে গ্রেফাতর করল বড়জোড়া থানার পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১০
Share: Save:

কাজ চেয়েছিলেন। উল্টে কাজ দেওয়ার নাম করে পিসেমশাই তাঁকে ধর্ষণ করে, দেহ ব্যবসায় নামায়। শনিবার বিকেলে তরুণী এই অভিযোগ করার পরে রবিবার সন্ধ্যায় সেই পিসেমশাইকে গ্রেফাতর করল বড়জোড়া থানার পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃত হায়দার মণ্ডলের বাড়ি বড়জোড়ার তাজপুর গ্রামে। এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও ইচ্ছের বিরুদ্ধে অন্যদের শয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। হায়দর এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত।

এ দিকে শনিবার ওই তরুণী অভিযোগ জানানোর পরেই তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ। মহকুমাশাসককে ওই তরুণী শনিবারই জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ায় খবর জানাজানি হলেই বৃদ্ধ বাবা-মাকে অত্যাচার করতে পারেন কিছু আত্মীয়। অভিযোগ, রবিবার তাঁদের ঘর থেকে বের করে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সোনামুখী থানার পুলিশ গিয়ে ফের তাঁদের ঘরে ফেরায়।

ওই তরুণীর মা এ দিন ফোনে বলেন, “খুব ভয়ে ভয়ে রয়েছি। মেয়ে ধর্ষিতা হওয়ায় গ্রামের লোকজন আমাদের খুব শাসাচ্ছে। মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে প্রথম কয়েক সপ্তাহ আমাদের বাড়িতেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিছুদিন আগে ফিরে এসেছি। মেয়ে পুলিশকে সব জানিয়েছে বলে ফের ওরা আমাদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে।” তবে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, “মেয়েটির পরিবারকে যাতে কোনও রকম নির্যাতন করা না হয়, তা সোনামুখী থানাকে দেখতে বলেছি। ওই পরিবারের উপর পুলিশ নজর রাখছে।” রবিবার নির্যাতিতাকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁর গোপন জবানবন্দির নির্দেশ দিয়েছে। আজ সোমবার ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

সোনামুখীর একটি গ্রামের স্বামী বিচ্ছিন্না ওই তরুণীর অভিযোগ, পরিবারের দুরাবস্থার জন্য তিনি পিসেমশাই হায়দারের কাছে কাজ চেয়েছিলেন। বড়জোড়ায় একটি ঘরে তুলে হায়দার তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে সেখানে তাঁকে দেহব্যবসায় নামায়। পালিয়ে গিয়ে তরুণী এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠলে সেখানে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। অভিযোগ সেই যুবকও তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেন। এরপর একদিন দুর্গাপুরের একটি হোটেলে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে ডেকে এক বন্ধুকে দিয়ে ধর্ষণ করায় বলে অভিযোগ।

ওই পরিস্থিতিতে এক গাড়ি চালক দুষ্কৃতীদের হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে লুকিয়ে রাখেন। দু’জনেরই জীবনের ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে দেখে ওই গাড়িচালকই শেষে আইনজীবীর পরামর্শ চাইতে তরুণীকে বাঁকুড়ায় নিয়ে আসেন।

মহকুমাশাসক অভিযোগটি পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের বিরুদ্ধে একাধিক ধারা দিয়ে মামলা শুরু করা হয়েছে। আপাতত ওই তরুণী বাঁকুড়ার একটি হোমে রয়েছেন। শনিবার রাতেই হোমে গিয়ে তাঁর সঙ্গে একপ্রস্থ কথা বলে আসেন পুলিশ আধিকারিকেরা। শনিবার অবশ্য হায়দর মণ্ডল যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন। সেই সঙ্গে ওই তরুণীর চরিত্র নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, আজ সোমবার তাকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rape uncle arrested police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE