Advertisement
E-Paper

ধর্ষণের মামলাই দিল পুলিশ

পরিচারিকার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের বাঁকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাই রুজু করল পুলিশ। যদিও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা গেল না পুলিশকে। শুক্রবার ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে।পরিচারিকার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের বাঁকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাই রুজু করল পুলিশ। যদিও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা গেল না পুলিশকে। শুক্রবার ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৩
বাঁকুড়া শহরে মিছিল। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়া শহরে মিছিল। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।

পরিচারিকার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের বাঁকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাই রুজু করল পুলিশ। যদিও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা গেল না পুলিশকে। শুক্রবার ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। পরে মহকুমাশাসকের অনুমতি নিেয় পুলিশ তাঁকে একটি হোমে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক সিংয়ের বিরুদ্ধে দু’বছর ধরে ভয় দেখিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করার অভিযোগ করেন তাঁরই বাড়ির তরুণী পরিচারিকা। অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেছেন, মাস কয়েক আগে অলোকবাবুর বাড়ির লোকজনদের নজরে ঘটনাটি এলে তাঁর কাজ যায়। এর পর এক দিন পেটে ব্যথা নিয়ে তিনি ডাক্তারের কাছে যান। ডাক্তার জানান, তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

এর পর চাপে পড়ে বাড়িতে দাদার কাছে ঘটনার কথা খুলে বলেন ওই মহিলা। বাঁকুড়া সদর থানায় অলোকবাবুর নামে অভিযোগ করতে এলে থানা তাঁকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। মহিলা তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ ওই মহিলাকে নিরাপদ হেফাজতে রাখে। মহিলার অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে নেওয়া হয়েছে দাবি করেও অভিযোগের কোনও প্রতিলিপি বা কোন কোন ধারায় মামলা করা হয়েছে, তা অবশ্য বৃহস্পতিবার জানায়নি পুলিশ। এমনকী, ওই দিন অভিযোগকারিণীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়নি। এই সব ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।

এ দিন অবশ্য পুলিশ ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করায় বাঁকুড়া মেডিক্যালে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩৭৬ ধারায় (ধর্ষণ) মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ কিন্তু কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদ করছে না পুলিশ? তিনি শাসকদলের নেতা বলেই কি পুলিশ হাত গুটিয়ে আছে? ওই পুলিশ কর্তার দাবি, “উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কাউকে এ ভাবে গ্রেফতার করা যায়না। ওই মহিলার কথাবার্তাতেও নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই আমরা পদক্ষেপ করব।’’ কিন্তু, অন্তত জিজ্ঞাসাবাদ হবে না, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি পুলিশের তরফে।

অন্য দিকে, অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছে এসই সি-র সারা ভারত মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠন। এই দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বাঁকুড়া শহরে মিছিলও করেন তাঁরা। দলের বাঁকুড়া শহর আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদিকা লীনা সরকার বলেন, “কী তদন্ত হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করা হয়নি অভিযুক্তকে। এটা বোঝাই যাচ্ছে শাসক দলের নেতা বলেই পুলিশ সঠিক তদন্ত রছে না!’’ অভিযোগকারিণী পুলিশের হেফাজতে থাকায় এ দিন তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। অভিযুক্তের শাস্তির দাবি তুলেছেন নির্যাতিতার দাদাও। তিনি বলেন, “এত বড় একটা অন্যায় হল, পুলিশকেও জানালাম, অথচ কিছুই হল না। আমরা গরিব মানুষ। শিক্ষিতও নই। তাই হয়তো বিচার পাচ্ছি না।’’

নির্যাতিতাকে ভরসা জোগাতে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করার দিন তাঁর কিছু গ্রামবাসীও থানায় এসেছিলেন। পুলিশের তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে তাঁদের মধ্যেও। এক গ্রামবাসীর কথায়, “পুরোটাই রাজনীতির খেলা হচ্ছে বলে বোঝা যাচ্ছে। অন্য ক্ষেত্রে তো ধর্ষণের অভিযোগ পেলেই পুলিশ গ্রেফতার করে। এ ক্ষেত্রে তা হল না।’’

এ দিন বিকেলে পুলিশের নিরাপদ হেফাজত থেতে অভিযোগকারিণীকে বাঁকুড়ার একটি হোমে পাঠানো হয়। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই মহিলা বাড়ি ফিরতে চাইছেন না। তার উপরে তিনি মানসিক ভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। তাই হোমে আপাতত থাকলে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দলীয় নেতারা অলোকবাবুকে ‘সৎ’ ব্যক্তি বলে উল্লেখ করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। অলোকবাবুও যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে জানিয়েছেন, অভিযোগকারিণী বছর দু’য়েক আগেই তাঁর বাড়ি থেকে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অলোকবাবুর বক্তব্য, “আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই চক্রান্ত করে এই সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি নির্দোষ।’’

Rape Trinamool panchayet Bankura Alok Singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy