Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ration Card

আঙুলের ছাপেও রেশন তোলার ব্যবস্থা

রেশন কার্ড অন্যের হাতে থাকলেও সামগ্রী পাওয়ার অন্য পথ গ্রাহকদের কাছে খোলা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন খাদ্যকর্তারা।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ০৬:০১
Share: Save:

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য ৩০টি পরিবারের রেশন কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে রোশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছিল দরিদ্র পরিবারগুলিকে। সম্প্রতি সদাইপুর থানা এলাকার পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে এমনই অভিযোগ সামনে আসে। প্রশাসনিক চাপ তৈরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রেশন কার্ডগুলি ফেরত পেয়ে যান ৩০টি পরিবার। কিন্তু, রেশন কার্ড অন্যের হাতে থাকলেও সামগ্রী পাওয়ার অন্য পথ গ্রাহকদের কাছে খোলা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন খাদ্যকর্তারা।

দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, যেহেতু রেশন কার্ডগুলি আধার সংযুক্ত, তাই এমনটা হলেও রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে না গ্রাহককে। তিনি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিয়ে নির্ধারিত রেশন সামগ্রী নিতে পারেন। নির্দেশে সেটা বলাও আছে। প্রতিটি রেশন কার্ডকে আধার সংযুক্তি করাতে হবে, গত সেপ্টেম্বরে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদ্ধতিতে ভুয়ো রেশন কার্ডের ব্যবহার বন্ধ করা যাবে। অন্য দিকে, এই প্রকল্প চালু হলে কোনও উপভোক্তা ভিন্-রাজ্যে গিয়ে বসবাস শুরু করলেও রেশন থেকে বঞ্চিত হবেন না। কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রক অবশ্য এটাও জানিয়েছিল যে, আধার নম্বর না থাকার জন্য কোনও উপভোক্তাকে বঞ্চিত করা যাবে না।

এ রাজ্যেও সব না হলেও বহু রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তি হয়েছে। আবার বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এখনও বহু উপভোক্তা কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্ত করেননি বলে দফতর সূত্রের খবর। প্রশাসন সূত্রের খবর, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা বা এনএফএসএম চালুর আগে রেশনে তিন ধরনের কার্ড ছিল। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে এখন মোট পাঁচ ধরনের কার্ড। ২০১১ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এবং পুরসভাগুলি থেকে আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করে খাদ্য দফতর। সেখানে যাঁদের নাম ছিল তাঁরা প্রত্যেকেই জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। তিন ধরণের কার্ড প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (পিএইচএইচ), সুগার প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (এসপিএইচএইচ) এবং অন্ত্যোদয় অন্ন-যোজনা (এএওয়াই)। জেলায় তিন ধরণের কার্ডের সংখ্যা ২৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৪৬টি।

কিন্তু, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে যাঁদের নাম বাদ গিয়েছিল, সেই তালিকায় এমন বেশ কিছু মানুষ ছিলেন যাঁরা সত্যিই খাদ্য সুরক্ষার আওতায় সুযোগ পেতে পারতেন। তাঁদের সকলকে প্রকল্পের সুবিধার মধ্যে নিয়ে আসতে রাজ্য সরকার রাজ্য খাদ্য প্রকল্প, খাদ্যসাথী নিয়ে আসে। রাজ্যের সেই যোজনায় কার্ড দু’ধরনের৷ রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ১ এবং আরকেএসওয়াই ২। খাদ্যসাথী প্রকল্পে ডিজিটাল রেশন কার্ড পেয়েছেন ১৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৭৭ জন। সেগুলি আকারে বড় সবুজ ও সাদা রঙের। নির্দেশ থাকলেও জেলায় ৪৩ লক্ষের বেশি কার্ডের একটা অংশ আধার সংযুক্ত নয়।

তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই সেটা করিয়েছেন, সেই সব কার্ড হোল্ডাররা, ই-পস (ইলেকট্রনিক পেয়ন্ট অফ সেল) মেশিনে রেশন কার্ডে ব্যবহারের বদলে আঙুলের ছাপ ব্যবহার করেই রেশন তুলতে পারেন। জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এখনও এটা চালু হয়নি। তবে বৈধ রেশন কার্ড হোল্ডার, যাঁরা কার্ড আধার সংযুক্ত তিনি এই সুবিধা পেতেই পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE