Advertisement
E-Paper

বিজেপিতে টিকিট পাকা নয় ভেবে কংগ্রেসের মঞ্চে সৌমিত্র? সুজাতার খোঁচা, আবর্জনার জায়গা নেই

সোমবার বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের সিহড় এলাকায় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তড়িৎ কুমার কোলের স্মরণসভা ছিল। সেখানে একটি রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। ওই মঞ্চে সৌমিত্র খাঁকে দেখা যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৩৯
Soumitra Khan

সৌমিত্র খাঁয়ের এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। —নিজস্ব চিত্র।

এ বার ছবি-বিতর্কে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। প্রয়াত কংগ্রেস নেতার স্মরণসভায় বিজেপি সাংসদের উপস্থিতি ঘিরে শুরু হয়েছে চাপানউতর। সৌমিত্র একে রাজনৈতিক সৌজন্য বলে দাবি করেছেন। কিন্তু তৃণমূলের কটাক্ষ, লোকসভা ভোটের আগে আবার দলবদলের পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপি সাংসদের। সেই সম্ভাবনা এবং জল্পনা সৌমিত্র নিজে উড়িয়ে দিলেও তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী সুজাতা মণ্ডল তাঁকে আবর্জনার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘‘আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই ওর।’’

গত ২ অক্টোবর, সোমবার বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের সিহড় এলাকায় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তড়িৎ কুমার কোলের স্মরণসভা ছিল। সেখানে একটি রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। ওই মঞ্চে সৌমিত্রকে দেখা গিয়েছে। বস্তুত, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে ওই কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন সৌমিত্র। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তার পর ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন সৌমিত্র। কিন্তু ঘাসফুল শিবিরেও থিতু হননি তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে আগে আবার রাজনৈতিক শিবির বদলান। যোগ দেন বিজেপিতে। এ বার বিজেপি তাঁকে ওই বিষ্ণুপুর আসন থেকেই টিকিট দেয়। দ্বিতীয় বার সাংসদ হন সৌমিত্র। গত বিধানসভা ভোটে সৌমিত্রের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলের তৃণমূলে যোগদান ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়। সেখান থেকে বিবাহবিচ্ছেদও হয় দু’জনের। অন্য দিকে, কিছু দিন আগেই নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। অভিযোগ, তিনি চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু কাউকে চাকরি দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে একে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন সৌমিত্র। যেমন এ বারের বিতর্কেও বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, তৃণমূল নানা ভাবে তাঁকে অপদস্থ করার ষড়যন্ত্র করে।

অন্য দিকে, সমাজমাধ্যমে সৌমিত্রের এই কংগ্রেসের মঞ্চে উপস্থিতির ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে নেটাগরিকদের একাংশ বলছেন, ঘাসফুল, পদ্ম ঘুরে আবার হাতেই থিতু হচ্ছেন সৌমিত্র। যদিও এই কথা শুনেই ফুঁসে উঠেছেন সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘তড়িৎ কুমার কোলে এলাকার প্রবাদপ্রতিম নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আমার পরিবারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম। তার মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়। আর আমি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের সাংসদ। কংগ্রেসের মতো পুরোনো, ভাঙাচোরা দলে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূলের কোনও নেতার স্মরণসভা হলেও আমি তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে যেতাম। তৃণমূলের আসলে এখন মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই আমার নামে যা খুশি, তাই বলে চলেছে।’’

ওই একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য দেবু চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যে আবার দু’রকম ইঙ্গিত। তিনি বলেন, ‘‘সৌমিত্র খাঁ কংগ্রেসে আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে ওই স্মরণসভায় সৌমিত্র উপস্থিত ছিলেন এলাকার সাংসদ হিসাবে।’’

অন্য দিকে, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য তথা সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতার কটাক্ষ, ‘‘খুব শীঘ্রই সেই দিন আসছে, যখন আর কোনও দলে জায়গা পাবে না ও (সৌমিত্র)। ওর ‘ফেস লস’ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করেছিল। এখন শুনছি, কংগ্রেসের মঞ্চে গিয়েছে। এক বার সিপিএমে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।’’ সেই সুরে গলা মিলিয়ে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের মানুষ জানেন লোকসভা নির্বাচন এলেই দলবদল করেন সৌমিত্র খাঁ। সম্প্রতি বিজেপিতে তেমন আমল পাচ্ছেন না উনি। তাই হয়ত দলবদল করে আবার কংগ্রেসে ফিরতে চাইছেন।’’

Soumitra Khan BJP MP bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy