ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এ বার বীরভূমের গ্রামীণ এলাকাতেও ১০- ১৯ বছরের কিশোরী, তরুণীদের কাছে স্বল্পমূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেবে প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ‘মেন্সট্রুয়াল হাইজিন স্কীম’ নামে ওই প্রকল্প চালু হবে কয়েক দিনের মধ্যেই। ইতিমধ্যেই বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার তরফে ১ লক্ষ প্যাকেট (প্রতিটিতে ৬টি করে ন্যাপকিন) স্যানিটারি ন্যাপকিনের বরাত দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতে গ্রামীণ এলাকায় মহিলাদের মধ্যে ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি চূড়ান্ত ভাবে অবহেলিত। সেই কারণে নানা ধরনের রোগ ও মাতৃত্বকালীন জটিলতা দেখা দেয়। এ জন্য দায়ী সচেতনতা ও স্যানিটারি ন্যাপকিনের অভাব। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ন্যাপকিন পাওয়া গেলেও বেশি দামের জন্য তা সাধারণে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। ওই সমস্যা মেটাতে ২০১২ সালে গ্রামীণ এলাকায় কম দামে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছনোর উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক। প্রথম ধাপে ওই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল, দেশের ২৫ শতাংশ মেয়েদের (যাদের বয়স ১০-১৯ বছর) কাছে ন্যাপকিন পৌঁছে দেওয়া। সেই সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল দেশের ২০টি রাজ্যের ১৫২টি জেলার দেড় কোটি মেয়ের। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে ‘ফ্রিডেস’ নামে একটি ব্র্যান্ডের একটি প্যাকেটে থাকত ছ’টি স্যানিটারি ন্যাপকিন। বিতরণের কাজ করেন আশাকর্মীরা। এখন সরকারি লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো হচ্ছে। তাতে রাজ্য সরকারগুলিও সক্রিয় ভাবে সামিল হয়েছে।
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি জানান, ঋতুকালীন সময়ে পরিচ্ছন্নতা এবং উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার জন্যই মেয়েদের নানা অসুখে ভূগতে হয়। প্রভাবিত হয় ভবিষ্যতের মাতৃত্বও। সচেতনতা এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনের অভাবই তার অন্যতম কারণ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই ফাঁকই পূরণ করতে চায় প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, গ্রামীণ এলাকায় কিশোরী, তরুণীদের হাতে ঋতুকালীন সময়ে উপযুক্ত গুণমানের নিরাপদ পণ্য পৌঁছে দেওয়া হলে বাড়বে সচেতনতাও।