সাঁইথিয়ায় শতাব্দী রায়। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। তার আগে কি দলের সাংগঠনির শক্তি বা দুর্বলতা নিজেই যাচাই করে নিতে চাইছেন শতাব্দী রায়? নিজের লোকসভা এলাকার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে বুথ সভাপতি ও দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার সভায় যে ভাবে বুথের শক্তি পর্যালোচনা করছেন বীরভূম কেন্দ্রের সাংসদ, তাতে সেই প্রশ্ন নিয়েই চর্চা চলছে।
ডিসেম্বরে শতাব্দী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। চলতি বছরের শুরু থেকে টানা মুরারই থেকে খয়রাশোলের বিভিন্ন এলাকায় কর্মী সম্মেলন করে চলেছেন সাংসদ। রবিবার সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূলের সম্মেলন সেরে এসেছিলেন খয়রাশোলের পাঁচড়ায়। এ দিন পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথ সভাপতি পঞ্চয়েত সদস্য অঞ্চলের নেতাদের নিয়ে কর্মিসভাতেও তার অন্যথা হয়নি। কর্মিসভায় অনেক সময় তাঁর কড়া মনোভাবের প্রকাশও ঘটেছে বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি।
শতাব্দী নিজে বলছেন, ‘‘কোনও একটি পঞ্চায়েত এলাকার নেতাদের সঙ্গে বসে জানতে চাইছি সেখানে ভোটার সংখ্যা কত, আগের নির্বাচনগুলিতে কোন রাজনৈতিক দল কতগুলি ভোট পেয়েছিল। কোন বুথে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে তাও জানছি।’’ এর কারণ নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এগিয়ে বা পিছিয়ে থাকার কারণ কী, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে কোন দিকগুলিতে জোর দিতে হবে।’’
প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। তবে টানা চতুর্থবার বীরভূম লোকসভা নির্বাচনে যে শতাব্দীই প্রার্থী হতে পারেন তার ইঙ্গিত মিলেছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অবর্তমানে কোর কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে একটু বেশিই খাটছেন শতাব্দী। বেছে বেছে দলের জন্য অপেক্ষাকৃত দুর্বল এলাকাগুলিকে নিশানা করছেন বলে দলীয় নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন।
বীরভূম লোকসভা আসনে মোট সাতটি বিধানসভা এলাকা (দুবরাজপুর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, হাঁসন, নলহাটি ও মুরারই) ও ১১টি ব্লক রয়েছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় প্রকাশিত এই আসনটিতে মোট ভোটারের সংখ্যা কম বেশি ১৫ লক্ষ। এই আসনে শাসক দলের টিকিটে শতাব্দী রায় টানা তৃতীয় বার জয়লাভ করেছেন। শেষ বার বেশি ব্যবধানে জিতেছেন। তবে ৭টি বিধানসভা আসনের ৪টিতেই পিছিয়ে ছিলেন তিনি। নলহাটি, মুরারই ও হাসন বিধানসভায় বড় ব্যবধানের জেরে শতাব্দী জয়লাভ করেন।
শাসক দলের একটি সূত্রের দাবি, দলের অন্দরের দুর্বলতা ঠেকাতেও বাড়তি মনোযোগ দিতে হচ্ছে শতাব্দীকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, অনুব্রতহীন বীরভূমে কোর কমিটির সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সামনে এসেছে। সেই সঙ্গেই সামনে এসেছে দুবরাজপুর, খয়রাশোল, মহম্মদবাজার ও সাঁইথিয়ার মতো এলাকায় সাংগঠনিক দুর্বলতা। তাই সাংসদকে বাড়তি সতর্ক হতে হচ্ছে বলে দাবি দলের অনেকের।
সেই সঙ্গে, সদ্য জেলার বিভিন্ন ব্লকে ব্লক সভাপতি বদল করা হয়েছে। এক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘মাথাব্যথার তিন ব্লক— খয়রাশোল, দুবরাজপুর এবং নলহাটি ২ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। তবে তাতে কাজের কাজ হবে কি না সেটা সময় বলবে। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে খামতি না ঢাকতে পারলে শতাব্দী রায়ের লড়াই কঠিন।’’ দুবরাজপুরে বা সাঁইথিয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্নও তুলতে দেখা গিয়েছে শতাব্দী রায়কে।
শতাব্দী নিজে বলছেন, ‘‘এখন তো একক নেতৃ্ত্বে জেলা চলছে না। এটুকু না করলে, বুথস্তরের কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না থাকলে তাঁদের সরাসরি বার্তা না দিলে চলবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy