Advertisement
E-Paper

জল বাড়ল নদীর, দেখা হল না ‘কোনি’

স্কুল থেকে সিনেমা দেখানো হবে, সেই জন্য বাড়ি থেকে সকলে জড়ো হয়েছিল খেয়া ঘাটে। কিন্তু কেই-বা জানত সিনেমা দেখায় ওদের বাধা হয়ে দাঁড়াবে ময়ূরাক্ষীর পাক খেয়ে ওঠা ঘোলা জল। ক্লাসের পাঠ্য ‘কোনি’ আর পর্দায় দেখা হল না প্রভাকর, মধুমিতাদের।

তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ১০:৪০
এপার-ওপার: মহম্মদবাজারে বেহিরার ঘাটে অপেক্ষা ছাত্রছাত্রীদের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

এপার-ওপার: মহম্মদবাজারে বেহিরার ঘাটে অপেক্ষা ছাত্রছাত্রীদের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

ঘোলা জলের বাড়-বাড়ন্ত দেখে মন খারাপ ওদের। জল নামা দূরের কথা, কাছে যেতেই যে বাধা-বকুনি। কেই-ই বা বলবে ‘ফাইট, কোনি ফাইট!’

এসব ভাবতে ভাবতেই কেউ ময়ূরাক্ষীর চরে বসে ওপারের দিকে চেয়ে আছে। কারও চোখ ফেরিঘাটের মাঝি অষ্টম পালের নৌকোর দিকে। তাহলে কী সত্যিই খেয়া পারে যাওয়া হবে না— নদীর জলের সঙ্গে ফুঁসছে ওদের একরাশ অভিমান! বেহিরার ঘাটে মনখারাপ নিয়ে বুধবার অপেক্ষায় থাকা ওরা সিউড়ির তিলপাড়ার অজয়পুর হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রী।

স্কুল থেকে সিনেমা দেখানো হবে, সেই জন্য বাড়ি থেকে সকলে জড়ো হয়েছিল খেয়া ঘাটে। কিন্তু কেই-বা জানত সিনেমা দেখায় ওদের বাধা হয়ে দাঁড়াবে ময়ূরাক্ষীর পাক খেয়ে ওঠা ঘোলা জল। ক্লাসের পাঠ্য ‘কোনি’ আর পর্দায় দেখা হল না প্রভাকর, মধুমিতাদের। মাঝি জানিয়ে দেয়, এই দুর্যোগে ছোটদের নৌকোয় পারাপারের ঝুঁকি। ‘‘নদীতে বান, তাই স্কুলের ছেলেমেয়েদের আজ আর পারাপার করা হবে না। কাল রাত থেকে জল বেড়েছে, বিকেলে জল বাড়লে ফেরার সময় বিপদ বাড়তে পারে,” বলছিলেন অষ্টম।

অন্য যাত্রীরা নৌকায় চাপলেও স্কুল পড়ুয়ারা ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে। জানা যায়, জল বাড়লে এ সমস্যা নতুন নয়। তিলপাড়া জলাধার থেকে জল ছাড়লে বেরিরা, ভেজেনা, দুমুনি, কানিয়াড়া, নরসিংহপুর-সহ অনেকগুলো গ্রামের মানুষ একদিকে ময়ূরাক্ষী আর অন্যদিকে কানা নদীর মাঝে থেকে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। বছরের অন্য সময়ের গড়া অস্থায়ী সেতু ভেসে যায় জলের তোড়ে। অগত্যা ভরসা বলতে ভুতুড়া পঞ্চায়েতের দেওয়া এই নৌকো।

দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী বেহিরার প্রভাকর পাল, মধুমিতা পালরা বলে, ‘‘কী করে জানব নদীতে জল বেড়ে যাবে। দেখা হল না কোনি!’’ স্কুলের বাংলা শিক্ষিকা কাকলী গুপ্ত বলেন, ‘‘দশম শ্রেণির বাংলা বইয়ের সহায়ক পাঠ্য হিসাবে গল্পের বই ‘কোনি’ পড়ানো হয়ে থাকে। এই গল্পের ওপর সিনেমা দেখলে আরো বেশি করে মনে প্রভাব পড়বে। আজ দেখতে পেল না ওরা।” একই কথা বলেন প্রধানশিক্ষক আশিস গড়াই। ‘‘সিনেমার মাধ্যমে গল্পকে আরও মনগ্রাহী করার চেষ্টায় আজ প্রজেক্টারের মাধ্যমে একটা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নদীর বানের জন্য আজ ওপারের গ্রামের ছেলে মেয়েরা আসতে পারবে না ভেবে খারাপ লাগছে।” তিনি দাবি করেন, বর্ষার সময় নদী পেরিয়ে আসা-যাওয়ায় সমস্যা প্রতিদিনের। সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করে বিষয়টি দেখছি।’’

স্কুল জানিয়েছে, সিনেমাটি আবার দেখানো হবে।

Heavy Rainfall Rain River Cross Cinema ময়ূরাক্ষী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy