এক টুকরো জমি নিয়ে দুই পড়শির বিবাদ। আর সেই পুরনো বিবাদই এ বার সংঘর্ষের চেহারা নিল। বোমার ঘায়ে দুই পরিবারের কমপক্ষে ছ’জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সাঁইথিয়া থানার বড়সিজা গ্রামের ঘটনা। ঘটনায় জখম দু’জনের অবস্থা গুরুতর। সিউড়ি সদর হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে, এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। কোনও পক্ষই কোনও অভিযোগও দায়ের করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড়ির পাশের অল্প পরিমাণ একটি জমিকে ঘিরে গ্রামের মৈনুদ্দিন শেখের সঙ্গে তাঁরই আত্মীয় তথা প্রতিবেশী রৌশন আলি শেখের দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছে। এ দিন সকালে রৌশন ওই জমিতে থাকা একটি পুরনো দেওয়াল ভেঙে নতুন দেওয়াল গড়ার কাজ শুরু করেন। মৈনুদ্দিনের অভিযোগ, রৌশন পরিমাণ মতো রাস্তার জন্য জমি না ছাড়ায় তাঁরা প্রতিবাদ করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে রৌশন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে মৈনুদ্দিনের দাবি। তিনি বলেন, ‘‘এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই রৌশন কিছু সঙ্গী নিয়ে এসে আমাদের উপরে বোমা মারে। আমিন শেখ নামে আমাদের এক জনের বাঁ হাতে বোমা লাগে।’’ রৌশনদের ছোড়া ইট-পাথরের ঘায়ে তাঁদের আরও দু’তিন জন আহত হয়েছেন বলে মৈনুদ্দিনের দাবি। প্রত্যেকেই প্রথমে সাঁইথিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমিনকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পড়শির সমস্ত দাবিকেই উড়িয়ে দিয়েছেন রৌশন আলি শেখ। তিনি বলেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েতের নিয়ম মেনে পুরনো দেওয়ালের পরিবর্তে আমার জমিতে নতুন দেওয়াল দিচ্ছিলাম। অহেতুক মৈনুদ্দিনরাই এসে কাজে বাধা দেন। ঝামেলা পাকান।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, তিনি প্রতিবাদ করতে মৈনুদ্দিনরাই তাঁকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে। সেই বোমার ঘায়েই তিনি ডান হাতে গুরুতর চোট পেয়েছেন বলে দাবি রৌশনের। পাশাপাশি তাঁর কয়েক জন সঙ্গীও ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন। জখম রৌশনকেও সাঁইথিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে সিউড়ি সদরে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। যদিও রৌশনের যখন হওয়ার পিছনে অন্য কারণ দেখাচ্ছেন মৈনুদ্দিনরা। তাঁদের দাবি, ‘‘রৌশনদের আমরা বোমা মারিনি। আমাদের উপরে ছুড়তে গিয়েই একটি বোমা হাতে ফেটে যাওয়াতেই রৌশন জখম হয়েছে। নিজের জখম হওয়াকে কাজে লাগিয়ে এখন আমাদের ঘাড়ে মিথ্যা অভিযোগ চাপাচ্ছে!’’ রৌশন সেই দাবিও মানেননি।
এ দিকে, সংশ্লিষ্ট ওই পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য আজিমুদ্দিন মল্লিক জানাচ্ছেন, ওই দুই পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে অনেক দিন থেকেই বিবাদ ছিল। পঞ্চায়েত থেকে এক বার বিষয়টি মিটিয়েও দেওয়া হয়েছিল। এ দিন ফের ওই জমিকে কেন্দ্র করেই দুই পরিবার বোমাবাজিতে জড়িয়ে পড়ে বলে তাঁর দাবি। অন্য দিকে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বোমা ছুড়তে গিয়ে তা হাতে ফেটে গিয়ে রৌশন জখম হয়ে থাকতে পারেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।