E-Paper

সমাজমাধ্যমে জোর তরজা অনুগামীদের

অনুব্রত ওরফে কেষ্ট জামিন পেয়ে জেলায় ফেরার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের ‘দূরত্ব’ নিয়ে চর্চা চলছে দলের অন্দরে।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৫ ০৮:৫০
শনিবার বিকেলে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল।

শনিবার বিকেলে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের তরফে বীরভূম জেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোর কমিটিকেই মান্যতা দেওয়ার ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই জেলা রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছুটা বদল এসেছে। অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী এবং কাজল শেখের অনুগামীদের মধ্যে ফের একবার তালঠোকাঠুকি শুরু হয়েছে সমাজ মাধ্যমে।

অনুব্রত ওরফে কেষ্ট জামিন পেয়ে জেলায় ফেরার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের ‘দূরত্ব’ নিয়ে চর্চা চলছে দলের অন্দরে। বস্তুত, দলের অন্দরে কেষ্ট-কাজল ‘লড়াই’ নিয়ে চর্চা নতুন কিছু নয়। এত দিন কেষ্ট মণ্ডল ছিলেন দলের জেলা সভাপতি। শুক্রবার সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রকাশিত তালিকায় বীরভূমের ক্ষেত্রে জেলা সভাপতি পদই উধাও! কোর কমিটিকে মান্যতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি কাজল-অনুগামীরা।

দুই পক্ষের কর্মীরা প্রকাশ্য কিছু না বললেও সমাজমাধ্যমে শুরু হয়েছে জোর তরজা। কাজল অনুগামী হিসাবে পরিচিত, জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি প্রীতম দাস সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের প্রকাশিত তালিকার ছবি তুলে ধরে ব্যঙ্গের সুরে লেখেন, “ইংরেজিতে লেখা আছে, তাই অসুবিধা হলে দুঃখিত। কোর কমিটি শেষ কথা। বীরভূম জেলায় কোনও সভাপতি রইল না। ধন্যবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার থেকেও বেশি ধন্যবাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়!”

এখানেই শেষ নয়। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ তুলে ধরে কাজল অনুগামীদের পক্ষে লেখা হয়েছে, ‘জেলার উন্নয়নের পাঁচ কাণ্ডারী’। ওই ফুটেজে কাজল শেখ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ সিংহ এবং দুই সাংসদ শতাব্দী রায় ও অসিত মালকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ৯ সদস্যের কোর কমিটির মধ্যে সেই ফুটেজে নেই অনুব্রত, বিকাশ রায়চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিংহ এবং সুদীপ্ত ঘোষ। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, ফুটেজ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কোন নেতা কোন দিকে!

এ দিন সকালে অপর একটি পোস্টে কাজল অনুগামী হিসাবে পরিচিত মীর রাজ লেখেন, “ইতিহাসকে জানতে হবে, দিদি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা কোর কমিটিকে মানতে হবে। বুঝতে পারছি বিরোধীদের কত কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কী আর করার আছে, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।” অন্য দিকে, অনুব্রত অনুগামী সিউড়ির এক তৃণমূল কর্মী শেখ ইন্তাজ লেখেন, “ভুলে যেও না, যাকে নিয়ে এত সমালোচনা করছো, তিনি কোনও বিধায়ক, সাংসদ বা মন্ত্রী নন। তিনি পদ নয়, পতাকায়, ক্ষমতা নয় মমতায় বিশ্বাসী। অনুব্রত মণ্ডল জিন্দাবাদ!” আর এক অনুব্রত অনুগামী পোস্ট করেন, “সবার নেত্রী যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাহলে বীরভূমের অভিভাবকও কেষ্ট মণ্ডল। একটা বাড়িতে একটাই মাথা থাকে।” অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, “রাজনীতিতে শেষের আগে শেষ বলে কিছু হয় না।”

অনুব্রত নিজে অবশ্য এ দিন স্বাভাবিক ছিলেন। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে পুজো সেরে, বেলার দিকে প্রতিদিনের মতো বোলপুরের নিচুপট্টিতে, নিজের বাড়িতে সাধারণ মানুষ ও দলের কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনেছেন। বিকেলে বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন কোর কমিটির দুই সদস্য চন্দ্রনাথ সিংহ, সুদীপ্ত ঘোষ। কার্যালয়ে হাজির কেষ্টর অনুগামীরা বলেন, ‘‘বীরভূম জেলায় দলকে এই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারিগর কেষ্টদাই। তাই যতই কোর কমিটি উপরে দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন, দাদার ভূমিকা আগেও ছিল, আগামী দিনেও থাকবে।’’

সহ প্রতিবেদন: বাসুদেব ঘোষ

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy