বিরবাহা হাঁসদার উপর হামলার প্রতিবাদে বন্ধের ডাক। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে থাকা রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে ‘হেনস্থা’র ঘটনায় তাঁর পাশে দাঁড়াল রাজ্যের আদিবাসী সংগঠনগুলি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আদিবাসীদের মোট ১৪টি সংগঠন যৌথ মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বিরবাহার উপর আক্রমণের প্রতিবাদে আদিবাসীদের ওই যৌথ মঞ্চ আগামী ৮ জুন বাংলা বন্ধেরও ডাক দিয়েছে।
রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে ক্রমশই নিজেদের সংগঠনের ঝাঁজ বাড়াচ্ছে কুড়মি সংগঠনগুলি। পাল্টা নিজেদের শক্তিবৃদ্ধিতে নেমে পড়েছে আদিবাসী সংগঠনগুলিও। শনিবার বাঁকুড়ার রাঢ় অ্যাকাডেমিতে একটি কনভেনশনে এ রাজ্যের মোট ১৪টি সংগঠন মিলিত ভাবে ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনস অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’ নামে একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করে। আদিবাসীদের সংগঠনগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে এই মঞ্চে ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’ ছাড়াও রয়েছে ‘ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ’, ‘কোড়া সমাজ’, ‘শবর এবং মাহালি সমাজ’ এবং ‘সারা ভারত সাঁওতাল একক সংগঠন’ নামে মোট ১৪টি আদিবাসী সামাজিক সংগঠন। আদিবাসীদের সম্মিলিত ওই মঞ্চের তরফে ঝাড়গ্রামে বিরবাহার উপর হামলার ঘটনার কড়া নিন্দাও করা হয়েছে।
‘ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সর্দার বলেন, ‘‘আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার বহু ক্ষেত্রে খর্ব হচ্ছে। সেই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার দাবিকে সামনে রেখেই আমরা এই মঞ্চ গঠন করেছি। ৮ জুন ফোরামের তরফে রাজ্য জুড়ে বন্ধ ডাকা হয়েছে। ওই দিন রাজ্যের প্রায় সর্বত্র রেল এবং সড়ক অবরোধ করা হবে।’’
‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর বাঁকুড়া জেলার গোডেৎ (সভাপতি) বিপ্লব সোরেন বলেন, ‘‘বিরবাহা হাঁসদা আগে এক জন আদিবাসী মহিলা। পরে তিনি রাজ্য সরকারের মন্ত্রী। আদিবাসী মহিলার উপর এই হামলার প্রতিবাদে বন্ধ ডেকেছি।’’
এই ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার রাতে। ঝাড়গ্রাম শহরে ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’র ‘রোড শো’ শেষ করে অভিষেকের কনভয় রওনা দিয়েছিল লোধাশুলি হয়ে শালবনির দিকে। সেই যাত্রাপথে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের দু’ধারে তখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুড়মি আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ, অভিষেকের কনভয়ের উদ্দেশে স্লোগান দেওয়া হয় ‘চোর চোর’ বলে। অভিযোগ, ওই কনভয়ে থাকা মন্ত্রী বিরবাহার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। মন্ত্রীর গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে যায়। ওই ঘটনায় কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় রাজেশকে। তাঁকে এক দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম আদালতের বিচারক। ওই কাণ্ডে ধৃত আরও ৭ জনকে পাঠানো হয়েছে এক দিনের জেল হেফাজতে।
অভিষেকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠার পর কুড়মিদের ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন যে, তিনি কুড়মিদের বিক্ষোভে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনতে পেয়েছিলেন। বিজেপিকে বিঁধে মমতা বলেন, ‘‘কুড়মি ভাইয়েরা এ কাজ করে না। করেছে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy