হুড়োহুড়ি: ‘লকডাউন’-এর আগে ফেরার তাড়ায় শিকেয় উঠল স্বাস্থ্যবিধি। বুধবার বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে। ছবি: শুভ্র মিত্র
পরপর দু’দিন ‘লকডাউন’। তার আগে বুধবার পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাজারে চোখে পড়ল মিশ্র ছবি। পুরুলিয়া সদর, রঘুনাথপুর ও আদ্রার আনাজ বাজার বা মুদির দোকানে তেমন ভিড় না থাকলেও মানবাজার, বান্দোয়ানের সাপ্তাহিক হাট এবং ঝালদায় মোটের উপরে ভালই ভিড় দেখা গিয়েছে। বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন বাজারগুলিতেও ভিড় ছিল যথেষ্টই।
মনসা পুজোর কারণে মানবাজার এলাকায় সোমবার ও মঙ্গলবার বেশিরভাগ দোকানই ছিল বন্ধ। তাই ‘লকডাউন’ শুরুর আগে এ দিন বাজারে কার্যত ভিড় উপচে পড়েছিল। আনাজ বাজার থেকে শুরু করে ফল বা মুদির দোকান ছিল ভিড়ে ঠাসা। সামাজিক দূরত্ব-বিধি মানার তাগিদ সে ভাবে কারও মধ্যে দেখা যায়নি। মানবাজারের বাসিন্দা প্রদীপ চন্দ্র বলেন, ‘‘মনসা পুজোয় দু’দিন দোকান বন্ধ ছিল। লকডাউনেও পরপর দু’দিন দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তাই যতটা পারি আনাজ, ফল কিনে রাখলাম।” তবে তাঁর মতো অনেকেরই অসন্তোষ, দোকানে ক্রেতারা একে অপরের উপরে কার্যত হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। তাই করোনাকালীন যে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে, তা একেবারেই মানেননি লোকজন। বান্দোয়ানে বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসে। ‘লকডাউন’-এর ঠিক আগের দিনে হওয়ায় সেখানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঝালদাতেও বাজারে ভিড় ভাল ভিড় চোখে পড়েছে। বিশেষ করে আনাজ বাজারে ভিড় ছিল অন্য দিনের চেয়ে অনেকটা বেশি। ঝালদার বাসিন্দা উত্তম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দু’দিন সার্বিক লকডাউন থাকবে। তাই আনাজ একটু বেশি করেই কিনলাম।” ঝালদা শহরের এক মুদি দোকানের মালিক অজিত দাসও জানান, অন্য দিনের চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা বেশি ছিল। সকলে একটু বেশি করেই জিনিসপত্র কিনেছেন।
তবে পুরুলিয়া শহরের ছবিটা ছিল একটু আলাদা। গত ‘লকডাউন’-এর দিনগুলির আগে যেমন উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছিল, সেই তুলনায় এ দিন ভিড় ছিল কিছুটা কমই। অনেকে জানান, মুদি দোকানের মাসকাবারি বাজার মাসের প্রথমেই করে রেখেছেন। বড়হাটের আনাজ বিক্রেতা বিনোদ সাউও বলেন, ‘‘অন্য সময়ে লকডাউনের আগে ক্রেতাদের জিনিস দিতে যেমন হিমশিম খেতে হয়েছিল, সেটা আজ হয়নি।” একই অবস্থা ছিল আদ্রার রেলের আনাজ বাজার-সহ মুদি দোকানগুলিতে। রঘুনাথপুর শহরে আবার ইদানীং করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে ‘লকডাউন’-এর আগের দিন বাজারে ভিড় হবে ধরে নিয়ে আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রেখেছেন। তাই সে ভাবে ভিড় জমতে দেখা যায়নি বাজারে।
তবে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা, দোলতলা, লালবাজার এলাকায় মুদি ও আনাজের দোকানগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ন্যূনতম দূরত্ব-বিধি মানার দায় সে ভাবে নজরে আসেনি। ভাল ভিড় চোখে পড়েছে বিষ্ণুপুর স্টেশন রোড, আনাজ বাজার, চকবাজার ও বিষ্ণুপুর হাইস্কুল মোড়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy