মিষ্টিমুখ: মায়ের সঙ্গে সৌরভ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
ফেরি করে গ্রামে গ্রামে শাঁখা বিক্রি করেন বাবা। অভাবের সংসারে ছেলের পড়াশোনার খরচ চালানোই কঠিন ছিল পরিবারের। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, উচ্চ মাধ্যমিকে মুরারই অক্ষয় কুমার ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সৌরভ নন্দী বিজ্ঞান বিভাগে ৪৯৭ পেয়ে জেলায় অন্যতম কৃতী।
মুরারইের বলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সৌরভের প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা জানান, ছোট থেকে পড়াশোনায় ভাল সৌরভ। দুঃস্থ পরিবারের ছেলের চোখে একটাই স্বপ্ন ছিল। তা হল ভাল পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাবা মায়ের অভাব মেটানো ও সেবা করা। বাবা গ্রামে গ্রামে শাঁখা ফেরি করে যে অল্প রোজগার করেন তাতেই পড়াশোনা ও সংসার চালাতে সঞ্চয় কিছু হয় না। সেই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা করেও সৌরভের এই সাফল্যে সকলে খুশি।
সৌরভের কথায়, ‘‘প্রত্যেকদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। চিকিৎসক হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটা কথাই সব সময় ভাবি, উচ্চ শিক্ষার খরচ বাবা কী করে বহন করবেন।’’ তবে নিজের লক্ষ্য নিয়ে প্রত্যয়ী সৌরভ। তার কথায়, ‘‘বাবা মা আমাকে যে কষ্ট করে পড়াশোনা করাচ্ছেন তার প্রতিদান একদিন দেবই। তার জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করব। আমাকে স্কুলের শিক্ষক ও অন্যরাও সাহায্য করেছেন। তাঁদের অবদান ভুলব না।’’
সৌরভের বাবা দীপক নন্দী বলেন, ‘‘করোনার জন্য রোজগার অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে সংসার খরচ, সেই সঙ্গে ওর পড়াশোনা। কতদিন ওর পড়াশোনার খরচ চালাতে পারবো জানিনা। উচ্চ শিক্ষার খরচ কোথা থেকে পাব সেই চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। তবে ছেলের পড়াশোনা চালাতে বাড়ি বিক্রি করে গাছ তলায় আশ্রয় নিতেও পিছপা হব না।’’
মুরারই অক্ষয় কুমার ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিমাইচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ছাত্র হিসেবে সৌরভ খুব ভাল। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক সময় বই দিয়েও সাহায্য করেছেন। স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইন ক্লাস নিয়মিত করত। ও ভাল ফল করায় আমরা গর্বিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy